ফাইনাল নয়, টেস্ট পরীক্ষায়ই শেখ হাসিনার গদি উল্টে যাবে : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৯ পিএম, ২৩ জুলাই,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৩৩ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে তাদের টিকে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নাই, তাই তারা আবোল-তাবল বলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, মেট্রিক পরীক্ষা দেয়ার আগে আমরা টেস্ট পরীক্ষা দিতাম, ফাইনাল পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষা দিতে হয়। ফাইনাল পরীক্ষা দেয়া লাগবে না টেস্ট পরীক্ষায় শেখ হাসিনার গদি উল্টে যাবে বাংলাদেশ থেকে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আওয়ামী লীগ নেতার শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যের প্রতিবাদে আজ শনিবার নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা রাত জেগে জেগে নয়, দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখেন এবং আতঙ্কিত হন জনগণের উত্তাল প্রবাহের মধ্যে নেতৃত্ব দিয়ে তারেক রহমান আসছেন। এই আতঙ্কে তার দিন-রাত কাটে বলেই তিনি তার সাধারণ সম্পাদকসহ সকল নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছেন জিয়া পরিবার সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলতে। এরা সেই কাজটুকুই করছে।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনার নেতাকর্মীদের দিয়ে এত কথাই বলান, তারপরেও আপনার সরকার এত আতঙ্কিত কেন? আপনার এত আতঙ্ক কেন? আপনারা বলেন বিরোধী দল বিএনপি নাই তারপরেও আপনাদের টার্গেট বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান কেন? মানুষ যতই অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করুক না কেন সব সময় আতঙ্কে থাকে কখন তার অপরাধ ও কুকীর্তির জন্য তার ওপর শাস্তি ধেয়ে আসে কি না।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা গণতন্ত্র হত্যা করেছেন, নির্বাচনকে নিরুদ্দেশে পাঠিয়েছেন। বিরোধী দলশূন্য করার জন্য গুম, খুনের মতো কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তারপরেও আপনাদের আতঙ্ক কাটে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আতঙ্কিত, আপনি ভেবেছেন নিজের মতো করে প্রশাসন সাজিয়েছেন আপনার কিছুই হবে না। কিন্তু আমরা চূড়ান্তভাবে দেখেছি বিপদ এলে কেউ এগিয়ে আসে না। জনগণ যখন রাস্তায় নামবে আপনাদের ধাওয়া করবে তখন আপনার লোকরাই আগে পালাবে তারা কেউ আপনার দিকে এগিয়ে আসবে না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আর কিন্তু বেশি সময় নেই। মেট্রিক পরীক্ষা দেয়ার আগে আমরা টেস্ট পরীক্ষা দিতাম না? ফাইনাল পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষা দিতে হয়। ফাইনাল পরীক্ষা দেয়া লাগবে না টেস্ট পরীক্ষায় শেখ হাসিনার গদি উল্টে যাবে বাংলাদেশ থেকে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শুনলাম নতুন একটা জিনিস আবিষ্কার করেছে কুইক রেন্টাল। এর তাৎপর্য ও পদ্ধতি আমরা পরে বুঝতে পারলাম। এটা এমন একটা পদ্ধতি যেটার মাধ্যমে নিজের আত্মীয়স্বজনকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। এই খাতে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। এই টাকা কারা পেয়েছে? সব আওয়ামী লীগের আত্মীয়স্বজন। আওয়ামী লীগের এমপি, নেতা না হলেও প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন। যদি তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন নাও করে তাহলে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে না। এই খাতে জনগণের পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা চলে গেছে। এই ক্যাপাসিটি চার্জে জনগণের ৫০ হাজার কোটি টাকা চলে গেছে কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো বিদ্যুৎ পায়নি। তাহলে আমরা কোন লুটেরাদের জগতে বাস করছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কেউ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। শান্তিতে বসবাস করতে পারবেও না যতদিন শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে আছে। চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করবে কারণ মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার নেই। সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকারকে তারা বন্দি করে রেখেছে। ভোট, নির্বাচন সবকিছুকে তারা কবরস্থ করেছে। এই পরিস্থিতি চলতে দেয়া যায় না। তাই রাজপথেই আমাদের নামতে হবে।
তিনি বলেন, রাজপথে নামলে আমাদের বাধা দিবে, এমনকি গুলি করতে পারে। এই গুলিকে বরণ করে রাস্তায় দাঁড়ালে শেখ হাসিনা থাকবে না। কারণ দেখবেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার আপনজনরা আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছে। তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মন্ত্রীকে বলছেন স্যার এই নিয়ে কত কথাবার্তা, আবার বলছে তরবারি ও রাইফেল নিয়ে রাস্তায় নামতে। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন বলেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে। এই যে তালগোল পাকিয়ে ফেলছে, তারা এতেই বুঝতে পেরেছেন তারা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে তাদের টিকে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নাই।
রিজভী বলেন, তারা আর একটা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করবে। দেশের জনগণ, ভোটার ছাড়া আর একটা নির্বাচন করার চেষ্টা করবে। সে জন্য কাজী হাবিবুল আউয়ালকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন। কিন্তু অবৈধভাবে, নিজের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কাউকে নিয়োগ দেন তাহলে সে তালগোল পাকাবেনই। তবে তাকে দিয়ে আর কোনো কাজ করাতে পারবেন না। কারণ একদিকে জনগণ অন্যদিকে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা, যারা জনগণের বিরুদ্ধে যাবে তারা তালগোল পাকাবেই টিকে থাকতে পারবে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, যুগ্ম সম্পাদক শাম্মী আক্তার, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এড. মিনা বেগম মিনি, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা দলের সহ-সভাপতি নায়েবা ইউসুফ, দক্ষিণের সভাপতি রুমা আক্তার প্রমুখ।