মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতির কারনে দেশে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে : ড. মঈন খান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪২ পিএম, ২১ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:০২ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, মানুষের জন্য কাজ করার নামই রাজনীতি, পকেট ভারি করার নাম রাজনীতি নয়। সরকার দেশে উন্নয়নের রোল মডেল বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু দেশের বাস্তব চিত্র খুবই ভয়াবহ। আওয়ামীলীগ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের দোহাই দিয়ে কুইক রেন্টালের নামে ৫০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আজ দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা। সরকারী হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেনা। জনগন আজ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বানবাসী মনুষদের জন্য যখন আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন তখন দেশে অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। মুলত মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতির কারনেই দেশে আজ অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। শুধু উন্নয়নের শ্লেগান দিয়ে একটি দেশ চলতে পারে না।
আজ বৃহষ্পতিবার সকালে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহযোগিতায় এবং সিলেট জেলা বিএনপির তত্বাবধানে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার উন্নয়নের জোয়ারে দেশ ভাসছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। আসলে উন্নয়নের জোয়ারে নয়, উজান থেকে আসা পানির জেয়ারে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এই বন্যার জন্য সরকারের ব্যার্থ পরিকল্পনা ও প্রতিবেশী দেশের বাঁধ নির্মাণই দায়ি। আওয়ামীলীগ দেশে গুম খুন ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, মাবুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। তাই আওয়ামীলীগের অধিনে কেনদিনই সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্টা ছাড়া নির্বাচন তো দুরের কথা এই মেরুদণ্ডহীব নির্বাচন কমিশনের আহবানে কোন সংলাপেও বিএনপি যাবেনা।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, যুগ্ন সম্পাদক শাম্মি আক্তার, সহ সভাপতি নাজমুন নাহার বেবী, সহ সভাপতি সামিয়া চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, বিএনপি শুধুমাত্র দেশের সর্ববৃহত্তর রাজনৈতিক দলই নয়, বিএনপি দেশের একমাত্র দায়িত্বশীল দল। সিলেটে এই তিন দফা বন্যায় আওয়ামিলীগের নেতাকর্মীদের খেঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী নিজেদের পরিবারে বাজারের টাকা থেকে সাহায্য নিয়ে জনগনের পাশে ছিল। এই অবৈধ সরকারের দায়িত্বশীলদের শুধুমাত্র টেলিভিশনে দেখা যায়, বাস্তবে তাদের দেখা মিলেনা। আওয়ামীলীগের প্রধানমন্ত্রী সিলেটে এসে হেলিকপ্টারে ঘুরে সার্কিট হাউজে যে ৭ জনকে ত্রাণ দিয়েছেন তাদের নাকি কভিড টেস্ট করা হয়েছে। এই যদি হয় জনগনের পাশে দাঁড়ানোর নমুনা তাহলে জনগন তাদের উপর আস্তা কিভাবে রাখবে। এই বন্যা প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ নয়, এটি মুলত কিশোরগঞ্জে দখলদার সরকারের রাষ্ট্রপতির বাড়িতে যাওয়ার জন্য অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত ৭৭ কি.মি রাস্তার জন্যই হয়েছে। আর আমরা বন্যার পানিতে ডুবতে ডুবছি। তাই এই জালিম সরকারের হাত থেকে বাঁচতে না পারলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও বাঁচা যাবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বার বার আপনাদের পাশে আসছি। আজ ২৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আপনাদেরকে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন। জনগনের এই দুঃসময়ে আওয়ামীলীগ জনগনের পাশে নেই। বিএনপিই এখন মানুষের ভরসাস্থল। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বন্যা দেখার নামে হেলিকাপ্টারে এসে সিলেট ভ্রমন করে গেছেন। তিনি জনগনের কাছে যান নি। আর আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই ১৯৮৮ সালের বন্যায়ও আপনারা দেখেছেন তিনি কিভাবে বন্যার মধ্যে পায়ে হেটে, রিক্সায় চলে, নৌকায় চড়ে জনগনের পাশে ছিলেন। এখনও তিনি আসতেন। কিন্তু এই অবৈধ সরকার আমাদের নেত্রীকে বন্ধি করে রেখেছে এবং আমাদের নেতা তারেক রহমানকে তারা দেশে আসতে দিচ্ছেনা। এজন্য আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই সরকার জনগনের কথা চিন্তা না করে লুটপাটে ব্যাস্ত। তারা ৪৪ লক্ষ বানবাসি মানুষের জন্য জনপ্রতি মাত্র ৬ টাকা ৫০ পয়সা করে বরাদ্দ দিয়েছে। এই টাকা দিয়ে একজন মানুষের পক্ষে কি করা সম্ভব। তাই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, দেশের মানুষ আজ অন্ন পাচ্ছেনা, বস্ত্র পাচ্ছেনা, চিকিৎসা পাচ্ছেনা। আর সরকার শুধু উন্নয়নের বুলি বুলাচ্ছে। আওয়ামীলীগ জনগনের কেন দুর্যোগেই পাশে ছিলনা। যেকোন সংকটে বিএনপিই জনগনের একমাত্র ভরসা। নিশিরাতের সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগনের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাই জনবিচ্ছিন্ন এই সরকারকে বিতাড়িত করার কোন বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা বিএনপি নেতা ইসতিয়াক সিদ্দিকী, মাহবুবুল হক চৌধুরী, একেএম তারেক কালাম, শহীদ আহমদ চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ, জেলা বিএনপি নেতা মাহবুব আলম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা আহাদ কুমকুম, যুগ্ন সম্পাদক মিলি আক্তার, দপ্তর সম্পাদক সুলতানা রহমান দিনা প্রমুখ।