দুর্ভোগ-ভোগান্তিতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের 'আনন্দ' নেই : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩৯ এএম, ১০ জুলাই,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:২২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
দুর্ভোগ-ভোগান্তিতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের 'আনন্দ' নেই বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হয়রত আলী নামে এক ট্রেন যাত্রী ২৪ ঘন্টায় উত্তরবঙ্গে নিজের বাড়িতে পৌঁছাতে পারেননি-ফেইসবুকে তার দেয়া পোস্টের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করলে গতকাল সকালে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ''যাতায়াত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে ট্রেনের কথা আপনি বলছেন-এগুলোর কোনো অথোরিটি আছে, কোনো কর্তৃত্ব আছে- সেটাই মনে হয় না। রাস্তা-ঘাটে আপনারা দেখেছেন প্রতিদিন কিভাবে দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। রেলের সময়সূচির বিপর্যয়, দেরি করে ছাড়া, দেরি করে যাওয়া-আসলে মূল কথাটা হচ্ছে যে, এই সরকারের কোথাও কোনো কর্তৃত্ব নেই। মানুষের এই যে দুর্ভোগ-ভোগান্তি, তাদের কোনো আনন্দ নেই। এই সরকার বলতে আমরা যেটা মনে করি যে, কোনো সুশাসন নেই, কোনো গভার্নেন্স নেই। শুধুমাত্র একটা দিকে তাদের লক্ষ্য দুর্নীতি করা এবং প্রকৃত পক্ষে দেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে।"
আজ রবিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন ও ফাতেহা পাঠ করেন। পরে দলের প্রতিষ্ঠাতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তারা।
মির্জা ফখরুল বলেন, ''বিদ্যুতের অবস্থা আপনারা দেখেছেন যে, বিদ্যুত নিয়ে এতো বড়াই করেছেন সেই বিদ্যুতে আজকে লোড শেডিং করতে হচ্ছে তিন ঘন্টা-চার ঘন্টা করে। এর মূল কারণ হচ্ছে দুর্নীতি। কারণ পাওয়ার প্ল্যান্ট যেগুলো নিয়ে আসা হয়েছে এটা সম্পূর্ণ ভাবে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে আনা হয়েছে। এসব প্রকল্প স্থাপনে কোনো আন্তর্জাতিক টেন্ডার পর্যন্ত হয়নি এবং এমন আইন করা হয়ে যে, এখানে যদি কোনো অভিযোগ উঠে তাহলে কোনো রকমের মামলা করা যাবে না-অর্থাত ইন্ডেমনিটি দেয়া হয়েছে। কোনো সভ্য দেশে কোনো প্রকিউরমেন্টের ক্ষেত্রে এটা কোনোভাবে হতে পারে না।"
কোনো পরিকল্পনাই সরকারের নেই। গ্যাসের কথা বলছে। আজকে এলএনজি নেয়ার জন্যে এই সরকার গ্যাস উত্তোলনের কোনো ব্যবস্থা করেনি। তারা পুরোপুরিভাবে বিদেশে থেকে এলএনডি আমদানি করে ১/২ টি কোম্পানিকে সহযোগিতা করার জন্য তারা এই সমস্ত দুর্নীতি করছে। গোটা ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশকে লুট করার জন্য সমস্ত পরিকল্পনা করে। প্রকৃত পক্ষে এই সরকার একটা লুটেরা সরকারে পরিণত হয়েছে, আওয়ামী লীগ একটা লুটেরা দলের পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, "অনির্বাচিত সরকারের উন্নয়নের যে মিথ, যে ধুঁয়া তারা তুলেন -এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের দুই লক্ষ্য আছে। একটি হচ্ছে দুর্নীতির মাধ্যমে তাদের পকেট ভারী করা এবং আরেকটি হচ্ছে জনগনকে বিভ্রান্ত করা যে তারা উন্নয়ন করছে। প্রকৃত পক্ষে এদেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। আজকে এখনো এদেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে গেছে। শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করছে।"
এই সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল, ডা. রফিকুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, গোলাম সারোয়ার, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, শ্রমিক দলের মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, জাসাসের জাকির হোসেন জাকির, জাহেদুল আলম হিটো, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।