জনগণ দ্বারা নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি এই সরকারের দায়বদ্ধতা নেই : ড. খন্দকার মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১০ পিএম, ৫ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৫৩ পিএম, ৮ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
জনগণ দ্বারা নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি এই সরকারের দায়বদ্ধতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন এরা ক্ষমতায় এসেছে গায়ের জোরে এবং টিকে থাকার চেষ্টা করছে গায়ের জোরে। জনগণের কন্ঠস্বরকে এরা লাঠি-গুলি দিয়ে স্তব্ধ করতে চায়, এরা ফ্যাসিষ্ট। এদের দ্বারা জনগণের কোনই কল্যাণ সাধিত হবে না। তিনি বর্তমান সময়ে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন-এক সময় আপনি দম্ভ করে বলেছিলেন লোডশেডিং নেই। কিন্তু তাহলে এখন বিদ্যূৎ নেই কেন ? কেনো ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট?
ড. মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক দাবী করে অথচ তাদের হাতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুন্ঠিত হয়েছে বারবার। তারা বিএনপি-কে ভয় পায়, শহীদ জিয়া-কে ভয় পায়। তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে ভয় পায় বলেই মিথ্যা মামলা আর ফরমায়েসী রায় দিয়ে তাদেরকে বন্দী রাখতে চায়। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা। এমন নির্বাচনী ব্যবস্থা তৈরী করা যেখানে দিনের ভোট রাতে হবে না। জনগণ নিজের ভোট নিজে দিবে।
তিনি ইভিএম এর কঠোর সমালোচনা করে বলেন, আবার ক্ষমতায় আসতে আওয়ামী লীগ ইভিএম-কে কাজে লাগাতে চায়, কারণ ইভিএম-এ আপনি যেখানেই ভোট দেন, সেটা নৌকাতে গিয়ে পড়বে। তাই আগামী নির্বাচন হাসিনার অধীনে নয় হাসিনামুক্ত ভাবেই করতে হবে। ইভিএম মুক্ত ভাবেই করতে হবে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, এগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ মঙ্গলবার বিকেলে যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ৫০ ও সাংগঠনিক ওয়ার্ড ৬৪ (পশ্চিম) এর সম্মেলনে প্রধান অতিথি'র বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি ঢাকা মহানগর বিএনপি-কে আগামী আন্দোলনের চালকের আসনে আসীন হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ঢাকা মহানগরীতে শেখ হাসিনার পতন হলে সারাদেশে পতন হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র যুগ্ম আহবায়ক ও সাংগঠনিক টিম-৭ এর প্রধান আব্দুস সাত্তার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের সূচনা করা হয়। পরে কোরআন তেলাওয়াত দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন-ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্লাহ নবী, জেষ্ঠ্য সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, সাব্বির আহমেদ আরেফ, লতিফুল্লাহ জাফরু, আব্দুল হাই পল্লব, জামশেদুল আলম শ্যামল ও নাসরিন রশীদ পুতুল সহ মহানগর ও স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের উদ্বোধক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বন্যাদূর্গতদের দূর্ভোগ লাঘবে সরকারের নির্লিপ্ততার সমালোচনা করে বলেন, হাসিনা সকল সরকারী তহবিল ও সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও ত্রাণ না দিয়ে বিএনপি কেন দিচ্ছে না এই সমালোচনা করেন। আবার বিএনপি ত্রাণ দিতে গেলে সন্ত্রাসী দিয়ে বাধাগ্রস্ত করছেন। তিনি সবাইকে দেশ বাঁচানোর শপথ নেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, এই সরকারের পতন ঘটানো না গেলে দেশ বাঁচানো সম্ভব নয়।
প্রধান বক্তা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, আমরা শহীদ জিয়ার গড়া দল বিএনপি'র রাজনীতি করি-যিনি ১৯৭১ সালে নিজের জীবন বাজী রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, যিনি পরবর্তীতে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করা বাংলাদেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলেছেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র জেষ্ঠ্য সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বর্তমান মেয়রের সমালোচনা করে বলেন, বিনা ভোটের এই মেয়র নির্বাচনের পূর্বে যানজট নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও যানজট নিরসনে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীর অধিকাংশ কর্মঘন্টা নষ্ট হয় সড়কে বসে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনে ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ ভোটে ৫০ নং ওয়ার্ডে শাকিল মোল্লা সভাপতি, ওয়াসিমুল কবির সাধারণ সম্পাদক ও সাইদুর রহমান মাসুদ সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাংগঠনিক ওয়ার্ড ৬৪ (পশ্চিম) এ আমানুল্লাহ বক্স সভাপতি, সালাউদ্দিন খান রিপন সাধারণ সম্পাদক ও লুৎফর রহমান সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।