বানভাসিরা চোখের পানি ফেলছে, আর সরকার আছে নাচ-গান নিয়ে : আমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪২ পিএম, ২৯ জুন,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০২:০৬ এএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
‘বানভাসিরা চোখের পানি ফেলছে, আর সরকার আছে নাচ-গান নিয়ে’— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান।
আজ বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর (উত্তর), ঢাকা জেলা এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা বাড়াতে এ বৈঠক ডাকা হয়।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘যখন বন্যা দেখা দিল, তখনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিলেন- দলের সব সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, স্যালাইন, বিভিন্ন ধরনের শুকনো খাবার, চাল-ডালসহ বন্য দুর্গত এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। আপনাদের (মিডিয়া) মাধ্যমে সারা দেশ দেখেছে, জাতি দেখেছে বিএনপি, বিএনপির অঙ্গসংগঠন এবং বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষিরা বানভাসি মানুষের পাশে গিয়েছে।’
‘আপনারা এটাও দেখেছেন- একদিকে বানভাসিরা চোখের পানি ফেলছে, না খেয়ে হাহাকার করছে, আরেক দিকে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের নামে গান-বাজনা-নৃত্য চলছে বাংলাদেশে। শুধু তাই নয়, সিলেট বিভাগে অনেক দিন বিদ্যুৎ ছিল না। অথচ আমরা দেখলাম পদ্মা সেতু উদ্বোধনের নামে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আলোকসজ্জার নামে কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ খরচ করা হচ্ছে’— বলেন আমান উল্লাহ আমান।
তিনি বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের জন্য সিলেট বিভাগে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩০ লাখ টাকা। আর পদ্মা সেতু উদ্বোধনে প্রায় সাড়ে নয় কোটি টাকা খরচ করে গোপালগঞ্জের মেহমানদের জন্য টয়লেট তৈরি করা হয়েছে।’
সরকারের ত্রাণ তৎপরতার সমালোচনা করে আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘দুর্গত জেলার জন্য কয়েক টন গম এবং সামান্য কিছু চাল দিয়েছে সরকার। কিন্তু বিএনপি যেহেতু জনগণের দল, বিএনপি যেহেতু দুর্যোগে-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ায়, সেহেতু আমরা বসে থাকতে পারিনি। ৮৮’র বন্যায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কাপড় ভিজিয়ে বিভিন্ন জেলায়, বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ত্রাণ দিয়েছেন। এবার আমাদের চেয়ারপারসনের পরামর্শে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে আমরা ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছি।’
‘কিন্তু আমরা যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই মানুষ আমাদের বলছে, আমরা সরকারি কোনো ত্রাণ সাহায্য পাচ্ছি না’— বলেন আমান উল্লাহ আমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি- পানি টান লেগেছে। পানি চলে গেলে সেখানে অসুখ-বিসুখ থাকবে। এই জন্য আমাদের ড্যাব ডাক্তারদের মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ঔষধ সহ যা কিছু দরকার মানুষের জন্য, সেগুলো আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘আমরা যেখানে গিয়েছি, সেখানেই দেখেছি, যে দায়িত্ব সরকারের তারা সে দায়িত্ব পালন করছে না। দায়িত্ব পালন করতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের পাশে দাঁড়াতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তারা আছে নিজেদের আনন্দ-উল্লাস নাচ-গান নিয়ে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।
একই স্থানে টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাদের নিয়ে ‘জরুরি’ বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান। বৈঠকে নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার শিরিন, স্বেচ্ছাসেবাবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।