সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে : আমির খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৬ পিএম, ১৫ জুন,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১৭ এএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে যারা নির্বাচনে যাওয়ার চিন্তা করছে তাদের ওপরে জনগণ তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের মধ্য থেকে যারা এ কার্যক্রম করার চেষ্টা করছে ভোট চুরির, ক্ষমতা দখল করার, নির্বাচন কমিশনসহ সবার ওপর জনগণ তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখছে। এই চুরির উচ্ছিষ্ট ভোগীরা এখন উঁকি মারছে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে ভোট চুরির মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, এটার আবার একটা উচ্ছিষ্টভোগী সৃষ্টি হয়েছে।
আজ বুধবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পল্লী চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, এরা (সরকার) যে মাল চুরি করে সে মালের ভাগ নেয়ার জন্য কিছু উচ্ছিষ্টভোগী সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে। আমি তাদের প্রতি বলতে চাই সমস্ত জাতি তাদের ওপর তীক্ষè দৃষ্টি রেখেছে। এরা বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান করছে। এই লোকগুলো কারা? এরা কোন ধরনের রাজনীতিবিদ? কোন দল? এদের উদ্দেশ্য কী? মানুষ তাদের ওপর তীক্ষè দৃষ্টি রেখেছে। দেশে এবং দেশের বাইরে। আমি তাদের অনুরোধ করব আল্লাহরওয়াস্তে এখনো সময় আছে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিন। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আমির খসরু বলেন, আগামী মাসগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আন্দোলনকে কীভাবে সফল করা যায়, আপনাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে নিয়ে আমরা যাতে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারি সেই প্রচেষ্টা আমাদেরকে চালিয়ে যেতে হবে।
আমির খসরু বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অসুস্থ নেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার বিষয়টি কিন্তু এদেশের মানুষের কাছে কেস স্টাডি হয়ে থাকবে।
আমির খসরু বলেন, যার যার অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মুক্তি সংগ্রাম কারও একার না দেশের ১৮ কোটি মানুষের। বিএনপির ৩৬ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা। দেশের কোর্টের মধ্যে ৯০ শতাংশ বিএনপির মানুষের আনা গোনা এখন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ দুই ভাগ হয়ে গেছে এখন একটা হলো কর্তৃত্ববাদী সরকার আরেকটি হচ্ছে গণতন্ত্রের পক্ষে মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের পক্ষে। বিএনপির অবস্থান জনগণের পক্ষে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা একদম ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসা-শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকলে পদ্মা সেতুর ঝলমলে আলো জনগণের কোনো কাজে আসবে না। বিষাক্ত খাঁচার ভিতরে ভয়ংকর জন্তুর সাথে মানুষ রেখে দিয়ে বিশ্বাস করা সে বেঁচে থাকেবে আর শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বিশ্বাস করা একই কথা। গ্রাম অঞ্চলের শিক্ষা ও চিকিৎসা একদম ভেঙে পড়েছে। মানুষের সুস্বাস্থ্য চিকিৎসা-শিক্ষার ব্যবস্থা যদি না থাকে তাহলে পদ্মা সেতু দিয়ে তারা কি করবে? পদ্মা সেতুর ঝলমলে আলো তাদের কোনো কাজে আসবে না।
তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে বাজেট দেয়া হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি যে হারে বাড়ছে এতে দেশের উদ্যোক্তা বাড়বে না। যেভাবে অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে, দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, যদিও করোনার আগে থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেকারত্বের হার বাংলাদেশে বেশি। এই অবস্থাতে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়বে। এই সরকারও দেখায় বেশি করে কম মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এত টাকার বাজেট দিয়েছে অথচ স্বাস্থ্য খাতে বাজেট আগের মত। গত বছর যা ছিল এবারও তাই। স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দিবেন না, বানাবেন পদ্মা সেতু। দেশের বেকারত্ব কমবে? স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি পাবে না। এমনিতেই স্বাস্থ্যখাত ধ্বংস করে ফেলেছেন। এগুলো থেকে বোঝা যায় আপনি জনগণের সরকার নয়। আপনি তো দিনের ভোট রাতে করে সরকার হয়েছেন। জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন। কুমিল্লা নির্বাচন হচ্ছে। এ নির্বাচন বিএনপি আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রত্যাখ্যানের যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে তা আজ প্রমাণিত। সকাল থেকেই অনলাইনগুলোতে দেখলাম বিভিন্ন বুথে পাতলা কাপড় দেয়া হয়েছে। যাতে বাইরে থেকে দেখা যায় কে কোথায় ভোট দিল। নৌকা মার্কা ছাড়া অন্য কোথাও ভোট দিবে বাইরে এসে থ্রেট দিবে। তাহলে বোঝা যাচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন কেমন হবে? এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যা বলে দেবেন সেই জিতে যাবে। কোন কোন জায়গা থেকে কাকে জিততে হবে তিনি বলে দেবেন আর নির্বাচন কমিশন তাই করবে।
আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম মারুফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-প্রচার সম্পাদক শামিমুর রহমান শামিম, এ্যাবের নেতা কৃষিবিদ ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ ।