বিদেশে না যাওয়ার শর্ত তুলে নেয়ার আহ্বান মোশাররফের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১১ পিএম, ১৫ জুন,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:১৫ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
অসুস্থ খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তিতে দেশে থেকে চিকিৎসা নেয়ার যে শর্ত তাকে দেয়া হয়েছে তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ আহ্বান জানান তিনি।
'বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে' এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তিতে শর্ত দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ধারার প্রশাসনিক নির্দেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় লেখা আছে, সাময়িক মুক্ত করা যাবে শর্ত দিয়ে অথবা শর্তহীনভাবে। অর্থাৎ সরকার এদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধা থাকে তাহলে সেই শর্তটি আপনারা (সরকার) তুলে নেন।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অনতিবিলম্বে যে বিধি-নিষেধ ও শর্ত আছে, তা তুলে নেন। যাতে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন। কিন্তু সেই শর্ত যদি তুলে না নেন এবং আমাদের নেত্রীর যদি কোন ক্ষতি হয় তাহলে আপনাদেরকেই তার দায়- দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু দায়- দায়িত্ব নয় একদিন এই জনগণের বিচারের কাঠগড়ায় আপনাদেরকে দাঁড়াতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বুঝে- না বুঝে বলেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে যেতে হবে। যে আর্দেশে আজকে বেগম খালেদা জিয়া সাময়িকভাবে মুক্ত। সেই আর্দেশে এবং ধারায়ই আপনারা শর্ত দিয়েছেন। আর আপনারাই একমাত্র শর্ত তুলে নিতে পারেন। প্রশাসনিকভাবেই শর্ত তুলে নিলে আজকে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন। অযথা আদালতকে দেখিয়ে লাভ নাই। কারণ আদালতের নির্দেশে কিন্তু তিনি সাময়িক মুক্ত নন। তাই তারা জেনে- শুনে অথবা অবুঝের মতো না বুঝে আমাদের এধরণের কথা বলে মূলত জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চান।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা এবং মেডিকেল বোর্ড বারবার সুপারিশ করেছেন তার উন্নত চিকিৎসা দরকার উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সেই চিকিৎসা বাংলাদেশে নাই। তাই বেগম জিয়ার বিদেশে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু কেনো যেতে পারছেন না? কারণ একটি বানোয়াট মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে প্রশাসনিক নির্দেশে সাময়িক মুক্ত আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে প্রশাসনিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে শর্ত দিয়ে দেয়া হয়েছে। শর্ত কি? তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। আজকে এই শর্তের জন্যই বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পারছেন না।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, অনেকেই বলেন, সরকারের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার কথা বলেন। আমরা এটা বলি না। কারণ বেগম জিয়া নিজেই নিজের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু সরকার যে বিধি- নিষেধ দিয়েছেন- সেজন্য তিনি বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না।
খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। এর মধ্যে একটিতে রিং পরিয়ে তাকে রক্ষা করা গেছে। আমরা ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, তার হার্টে শিরা- উপশিরার আরো দুটি ব্লক রয়েছে। টেকনিক্যালের কারণে এখন সেই চিকিৎসা করা যাচ্ছে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।