জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালেদা জিয়া, উল্লাস করছেন শেখ হাসিনা : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১২ পিএম, ১২ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৪ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অথচ শেখ হাসিনা উল্লাস করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অথচ শেখ হাসিনা উল্লাস করছেন। শেখ হাসিনার উল্লাস আদিম-অরণ্যের উল্লাস। আদিমকালে শিকারকে আঘাত করে, তাকে কব্জায় নেয়ার পর শিকারী যেভাবে উল্লাস করত সেই আদিম উল্লাস করছেন শেখ হাসিনা। গোটা জাতিকে বন্দি করে, গোটা জাতির বাক স্বাধীনতাকে বন্দি করে, গোটা জাতির মৌলিক অধিকারকে বন্দি করে, শেখ হাসিনা এখন উল্লাস করছেন পদ্মা সেতু দেখিয়ে।
আজ রবিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যায়লে এক দোয়া মাহফিলের তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, বিদেশে উন্নত সুচিকিৎসা ও সুস্থতা কামনায় এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, নেত্রী জটিল সমস্যায় ভুগছেন। লিভারের জটিল সমস্যা, কারাগারে নেয়ার আগে চোখে অপারেশন হয়েছিল। সেই জরাজীর্ণ কারাগার, পুরোনো বিল্ডিংয়ের ধুলোবালি তাঁর অপারেশন করা চোখে পড়েছে। এটাও একটা নির্যাতন। তারপর করোনা আসলো, সেই করোনার মধ্যেই তাঁকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। তারপর ভুগলেন ভয়াবহ করোনায়। এর মধ্যে গতকাল আমরা জানলাম তাঁর হার্ট এট্যাক হয়েছে। তাহলে বুঝুন কী রকম শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে তিনি পড়েছেন। আমি গতকাল দেখতে গিয়েছিলাম, দূর থেকে দেখেছি। দেশনেত্রীকে চেনা যায় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পরিস্থিতি যখন এই, তখন কী বার্তা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী? পদ্মা সেতু নিয়ে কত আয়োজন করা হবে। কত জৌলুশ করা হবে। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় উৎসব করা হবে। কারণ তার মনের মধ্যে আনন্দ। একনায়ক শাসকের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী যদি খুব খারাপ অবস্থায় থাকে, জীবন যন্ত্রণার শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে থাকে তখন এটা তাদের জন্য আনন্দের হয়। শেখ হাসিনা সেই আনন্দই করছেন।
পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, মনে হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জন্য যে সেতুটি, সেটি একবারে নিজের পৈতৃক টাকা থেকে তিনি বানিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু একবারও তিনি বললেন না যে, এটা অল্প টাকায় বানানো যেত। বিশ্ব ব্যাংক যে উদ্যোগ নিয়েছিল সেখানে তার মন্ত্রী, তার উপদেষ্টারা ঘুষ চাওয়াতে বিশ্ব ব্যাংক সেটা বাতিল করেছে। বিশ্ব ব্যাংক সবচেয়ে অল্প সুদে প্রকল্পে অর্থায়ন করে। এখন চীনের কাছ থেকে চড়া সুদ নিয়ে এতিদিনে পদ্মা সেতু তিনি করেছেন। এই চড়া সুদের কারণে প্রায় ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নবজাতক শিশু তার মায়ের পেট থেকে জন্ম নিচ্ছে। এটা শেখ হাসিনার অবদান। গোটা জাতিকে, নবজাতক শিশুকে তিনি ঋণগ্রস্ত করেছেন। সাবেক ছাত্রদলের এ নেতা বলেন, সারাদেশের মানুষ এখন ঋণগ্রস্ত। মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষরা আগে যে টাকায় পণ্য কিনতে পারতেন এখন তা পারবেন না। সাধারণ মানুষ চোখে অন্ধকার দেখছে। বৈশাখের ঝড়ের আগে যে ঘন অন্ধকার হয়, মানুষের চোখে চোখে সেই অন্ধকার দেখছে। শেখ হাসিনা বুঝতে পারছেন না গোটা জাতির সঙ্গে, মধ্য আয়ের মানুষের সঙ্গে, নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে, তাদের ক্ষুধা নিয়ে তামাশা করছেন। তাদের দারিদ্র্য নিয়ে রসিকতা করছেন। তিনি তাদেরকে ব্যঙ্গ বিদ্রƒপ করছেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েলের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার, সহ-সভাপতি আনু মোহাম্মাদ শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, সহ-সাধারণ সম্পাদক সর্দার নুরুজ্জামান, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজোয়ান ইসলাম রিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।