জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন জিয়াউর রহমান : নজরুল ইসলাম খান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৩ পিএম, ১০ জুন,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৩১ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় দুঃসময়ে দেশের জন্য কাজ করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যখন কেউ দেশের স্বাধীনতার চিন্তা করেননি, তখন তিনি সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। যিনি এত বড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে যাঁরা মিথ্যাচার করেন, তাদের কী বলা যাবে তার ভাষা খোঁজে পাই না। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার কারো অবদান স্বীকার করতে চায় না। জিয়াউর রহমান ছিলেন সর্বোত্তম খেতাব বীর উত্তম, তা কেড়ে নিতে পারেন না। ইন্দিরা গান্ধী নিজেই বলেছেন তিনি কখনো শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে শোনেননি। তারা তো ইন্দিরা গান্ধীকে সে কথা জিজ্ঞেস করলেন না। আজকে জিয়ার নাম উচ্চারণ করতে তাদের হিংসা হয়। কিন্তু জিয়াউর রহমান জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। জনগণ তাঁকে ভালোবাসেন। যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই জিয়ার অবদান দেখতে পাবেন। বাংলাদেশের মুল উন্নয়ন বিএনপির হাতেই হয়েছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর নতুন বাজারস্থ বিএনপির কার্যালয় শহীদ জিয়াউর রহমানের জীবন কর্ম নিয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত শহীদ জিয়ার কর্মময় জীবন ভিত্তিক বই ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। এ সময় মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, সাবেক ডীন অধ্যাপিকা তাজমেরী ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার।
এ সময় ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলুসহ মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের র্শীষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, জিয়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভবনটিও তিনি করে দিয়েছেন। আজ জিয়ার অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক কোটি মানুষ বিদেশে পাঠিয়ে রেমিট্যান্স এনেছেন। গার্মেন্টসের পণ্য রপ্তানি করে দেশের উন্নয়ন জিয়ার অবদান। পদ্মা সেতুর প্রথম দিকের কাজ বেগম জিয়া করে গেছেন। যে কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। সেই টাকা এখন কয়েক গুণ হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকরা নিগৃহীত হচ্ছে। ভুল শিখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. তাজমেরী ইসলাম বলেন, জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। তিনি মাত্র ৬৩ মাসে উন্নয়নের নজীর স্থাপন করে গেছেন। ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তিনি দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষের প্রসংশা কুড়িয়েছেন। শহীদ জিয়া নারী ও শিশুদের জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। এক বছরে ১৮ শো নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কোনো বিচার নেই। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে জনগণ মুক্তি চায়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, দেশপ্রেমের জন্য মানুষ শহীদ জিয়াকে ভালোবাসেন। জিয়া বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে গেছেন। জিয়া নেতা ছিলেন না। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর সফলতার জন্য তিনি নেতা হয়েছিলেন। সঙ্কটের সময়ে বিশ্বের দরবারে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। ভারতের সাথে দেশের যতগুলো চুক্তি হয়েছে তারমধ্যে গঙ্গা চুক্তি ছিল ভারসাম্য। জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে মিস আন্ডার স্টেন্ডগিং করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন, আমি বিএনপি করি না কিন্তু বিএনপিকে ভালোবাসি। জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর দেশ বাচাঁনোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলেই দেশটি আজ বেচে যায়। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য আনসার ও ভিডিপি এবং পুলিশ বাহিনী গঠন করেছিলেন। সেনাবাহিনীর বিগ্রেড তিনি করেছিলেন।
মুহাম্মদ ইব্রাহিম আরও বলেণ, পদ্মা সেতু দেশের একমাত্র উন্নয়ন নয়। এটি নির্মানে যত টাকা ব্যয় হয়েছে তার একটা অংশ পাচার করা হয়েছে বলে মানুষের ধারণা। জিয়া কোনো দিন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো কটুবাক্য উচ্চারণ করেননি।