জাতীয় বাজেট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মুখপাত্ররা প্রতিক্রিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩৮ পিএম, ৯ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:১৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।
মহামারীর দুই বছর পেরিয়ে উন্নয়নের হারানো গতি পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশায় নতুন অর্থবছরের জন্য রেকর্ড ঘাটতি রেখে যে বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাব করেছেন, তার ১৫.৭ শতাংশ তাকে যোগাড় করতে হবে ব্যাংক থেকে ঋণ করে। এ বাজেট কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মুখপাত্ররা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে - এক নজরে দেখে আসা যাক, দেশের রাজনীতিবিদরা এই বাটেজ নিয়ে কি বলছেন,
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মতে, করোনা মহামারী থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যই এই বাজেট। নিম্নবিত্ত ও গরিবের কথা চিন্তা করেই এ বাজেট দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সামাজিক উন্নয়ন খাতে এবারের বাজেট বরাদ্দ বেশি রাখা হয়েছে।
এদিকে দেশের আরেক প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমাগীর বলছেন, জনগনের জন্য এই বাজেট নয়। কতটুকু লুটপাট করা যায় তার জন্য ৬ লাখ কোটির বেশি বাজেট দিয়েছে সরকার।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, '২০২২-২৩ প্রস্তাবিত বাজেট উচ্চাভিলাষী। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনিতেই বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আর এ কারণেই জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েই চলছে, এমন বাস্তবতায় বিশাল বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বাজেট বলতে হচ্ছে।'
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন,এই সরকার বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নেবে, এটা আমরা প্রত্যাশা করি না। করোনার মত বিশেষ একটা সময় যখন একেবারে ভিন্ন চিন্তার ভিন্ন কাঠামোর বাজেট দেবার কথা ছিল, তখনও আমরা আগের সব বাজেটের গতানুগতিক ধারাবাহিকতাই দেখেছি।
বর্তমানে দেশ যখন সামষ্টিক অর্থনীতির একটা বড় ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে আছে তখনও গতানুগতিকতার বাইরে আলাদা কিছু হয়নি।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, প্রকৃত অর্থে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রতিবছর সরকার যে বাজেট দেয়া হয় তাতে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের চলতি নীতিমালারই প্রতিফলন ঘটে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে ক্ষমতাসীন সকল রাজনৈতিক দল তথা শাসক শ্রেণি পুঁজিবাদী মুক্তবাজার অর্থনীতিকে কেন্দ্র করেই বাজেট প্রণয়ন করেছে। ফলে দারিদ্র্য, বৈষম্য, লুটপাট-দুর্নীতি ও সম্পদের কেন্দ্রীভবন ত্বরান্বিত হয়, যা বর্তমানে চরম রূপ নিয়েছে।
তারা আরো বলেন, পুঁজিবাদী বিকাশের ধারায় জিডিপি বেড়েছে তার পরিণতিতে দেশে ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ-প্রকৃতি বিনাশের মেগা প্রকল্পে ঋণও বেড়েছে। অন্যদিকে ঋণ-কর খেলাপি চোরাই টাকার মালিকদের সম্পদ বেড়েছে।মধ্যম আয়ের দেশের মানুষেরা কম মজুরিতে কাজ করে শ্রম নির্ভর রফতানিমুখী শিল্পে ভর্তুকি দিতে থাকবে, এমনটা আশা করা ঠিক হবে না।
এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেছেন,সরকারের প্রস্তাবিত এই বাজেট দিয়ে নাক ভাসিয়ে বাঁচা যাবে হয়তো কিন্তু মানুষের জন্য স্থায়ীভাবে সর্বজনীন জনস্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা, ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিত করার পথ তৈরি হবে না। অথচ এই বাজেটের যে আকার এবং আমাদের জাতীয় অর্থনীতির যে সক্ষমতা আছে তা দিয়ে এবারের বাজেটেই ছকের বাইরে গিয়ে সর্বজনীন জনস্বাস্থ্যসেবা, সর্বজনীন শিক্ষা, সর্বজনীন খাদ্য নিরাপত্তা, সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সর্বজনীন অধিকার প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যেতো।