সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনার জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনা দায়ী : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ৫ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩২ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহত হওয়ার ঘটনায় সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রবিবার (৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এ ঘটনায় অত্যন্ত আতঙ্কিত হচ্ছি এই ভেবে, বলা হচ্ছে আমাদের দেশ আধুনিক হয়ে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুর হয়ে যাচ্ছে। তারপরও ন্যূনতম নিরাপত্তাব্যবস্থা না রেখেই শুধু উন্নয়নের নামে সম্প্রসারণ করা আর সেই সঙ্গে অর্থ কামানো বা চুরি করার ঘোরতর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান করছি। এ ঘটনায় যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবার বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর। আমাদের মন্ত্রী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন যাঁরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, তাঁরা শুধু মুখেই কথা বলেন। তাঁদের কথা শুনলে মনে হয় দেশে উন্নয়ন উন্নয়ন আর উন্নয়ন চলছে। কিন্তু সীতাকুণ্ডে যে দুর্ঘটনা ঘটল, এতগুলো মানুষ আহত হলো, প্রাণ চলে গেল, এটার জন্য দায়ী সরকারের অব্যবস্থাপনা, সরকারের নির্লিপ্ততা এবং উপযুক্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা তৈরি না করা।’
যুব মহিলা লীগের কর্মসূচিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্য, ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দিয়ে বিএনপি প্রমাণ করেছে, পঁচাত্তর তারাই ঘটিয়েছে, জিয়াউর রহমান ঘটিয়েছেন—এর জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা নন-পলিটিক্যাল, অপ্রয়োজনীয় একটা ইস্যু। মূল ইস্যু জনগণের ভোটাধিকার, নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন, যেসব ইস্যু আমরা অন্য দলের সঙ্গে কথা বলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি, এটাতে সরকারের মাথা গরম হয়ে উঠেছে। আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতেই এসব ইস্যু তুলছে।’
‘দেশের সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের দেশগুলোর মতো’—বাণিজ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারি লোকজন চুরি করতে করতে এমন জায়গায় চলে গেছে, যেখান থেকে সাধারণ মানুষের কষ্ট তারা আর বোঝে না। তারা টাকা পাচার করে বিদেশে বাড়ি করে ফেলেছে। মালয়েশিয়ায় লোকবল নিতে ২৫টি সিন্ডিকেট কোম্পানি তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনটি এমপিদের আর দুটি মন্ত্রীদের। একটা আবার অর্থমন্ত্রীর স্ত্রীর নামে। এটা দেখলেই বোঝা যায়, এ সরকার কীভাবে সম্পদ লুণ্ঠন করছে। যে দেশে দারিদ্র্যের হার ৪২, সেখানে কেউ যদি বলেন, সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মতো, এটা সাধারণ মানুষের প্রতি পরিহাস ছাড়া কিছুই না। এটা গোটা জাতিকে অপমান করার শামিল।’
‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত দেওয়া হবে’—ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো কথাই আমরা মূল্য দিই না। তাদের কোনো গুরুত্বই দিই না। কারণ, তারা প্রতারক। কথা বলে একটা, কাজ করে আরেকটা।’
এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি মো. তৈমূর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি আবু তাহের, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. নুরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।