সরকারের কারসাজিতেই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৬ পিএম, ২ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৫৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
'সরকারের কারসাজিতেই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে' বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চাল, দুধ, পাউরুটিসহ খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ''আপনারা বললেন যে, আটা, ময়দা, দুধ, পাউরুটি দাম বেড়েছে... আমাদের গরীব লোকরা কি করে? বেশির ভাগ রিকশা শ্রমিক যারা, তারা দিনের বেলা রিকশা চালিয়ে ফুটপাট থেকে একটা কলা ও পাউরুটি খায়। আজকে সেই রুটির দাম ডাবল হয়ে গেছে, তিনগুন হয়ে গেছে। চালের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকায় উঠে গেছে। এমনকি সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যে যে, ১০ টাকা কেজি চাল যারা ৬২ হাজার লোককে দেয়া হতো সেখানে তারা ১৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ সরকার নিজেই এই মূল্য বৃদ্ধি করার জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে এবং তাদের কারসাজিতেই আজকে খাদ্যপণ্য বলুন, খাদ্য দ্রব্য বলুন এর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জনগনের দুর্ভোগ হচ্ছে।"
মির্জা ফখরুল বলেন, ''বর্তমান সরকারের সমস্যাটা হচ্ছে যে তারা সবকিছুর মধ্যেই অবৈধ মুনাফা চায় এবং জনগনের ন্যুনতম প্রয়োজন যেটা খাদ্য, এই খাদ্যকে তারা এখন জিম্মি করে প্রফিট নিতে চায়, মুনাফা লুটতে চায়। এটা আজকের ব্যাপার না, প্রথম ১৯৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষটা হয়েছিলো সেখানে কিন্তু খাদ্যসংকট ছিলো তা না, দুঃশাসন-দুর্নীতির কারণে দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। আজকে ঠিক একইভাবে খাদ্যশষ্য যেটা মানুষের বেশি দরকার সেটাকে তারা অন্যায়ভাবে দাম বাড়াচ্ছে, মজুদ করছে, আটকে রাখছে। আর্টিফিশিয়াল একটা ক্রাইসিস তৈরি করে তারা বাজারে দামটা বাড়িয়ে দিচ্ছে।"
দুপুর ১২টায় রাজধানীর বাসাবোতে হেলথ এইড ডায়াগনস্টিক এন্ড হাসপাতালে চিকিতসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৪ মে ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহহিয়া ও উত্তর ছাত্রদলের নেতা শাহাবুদ্দিন শিহাবকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব। তিনি চিকিতসকদের কাছ থেকে তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
এই সময়ে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুগ্ম আহবায়ক ইউনুস মৃধাসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ''আওয়ামী লীগ সরকার সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাকে ধরে রাখতে চায়, জনগনের ভালোবাসায় নয়। এটা হচ্ছে তাদের মৌলিক চরিত্র। আজকে শুরু নয় বা এবারে শুধু নয়, প্রতিবার, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে তাদের রাজনীতিকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে। তারা সন্ত্রাস করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশের মানুষকে একটা 'ফিয়ারো ফোবিয়া'র মধ্যে রেখে আবারো আগামী নির্বাচন করতে চায়, সেই নির্বাচন পার হতে চায়। বাংলাদেশের এবার তা অবশ্যই হতে দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ মনে করে যে, এই নির্বাচন কোনো মতেই আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা সম্ভব না। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় জনগনের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে এখানে নির্বাচন হতে হবে।"
ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে গড়ে তোলার আহবানও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ''বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো রকমের সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেবে না। জনগনের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মধ্য দিয়েই এই সন্ত্রাসকে পরাজিত করে জনগনের বিজয় ঘোষিত হবে।"