পতন ঘণ্টা বেজে গেছে; বাঁধা আসলে প্রতিহত করা হবে : মনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৮ পিএম, ২৯ মে,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫৫ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি, দায়ের হওয়া বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার এবং হেলমেটধারী ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারদের গ্রেফতারের দাবিতে নগরীতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি।
আজ রবিবার দুপুর ১২ টায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনের সামনে থেকে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ আয়োজনে মিছিলটি শুরু হয়। এরপর সার্কিট হাউজ, স্টেডিয়াম মার্কেট, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কেসিসি মার্কেট, জেলা পরিষদ ভবনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ হাদিস পার্ক সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
এখানে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা, জেলা আহবায়ক আমির এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো: তারিকুল ইসলাম জহির।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ সিনিয়র সিটিজেনদের সম্পর্কে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর করা কটূক্তির প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে খুলনায় বিক্ষোভ সমাবেশ পুলিশের সহায়তায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পন্ড করে দেয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডাররা। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারির দায়িত্ব ভুলে দলীয় ক্যাডারের ন্যায় আচরণ করে। তারা অস্ত্রধারী শাসক দলের গুন্ডাদের নিবৃত না করে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচালে নির্বিচারে গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। পুলিশ বিএনপির সমাবেশের চেয়ার ও মঞ্চ ভাংচুরে অংশ নেয়, যা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সরাসরি ভিডিও ফুটেজে প্রচার হয়েছে। পুলিশ নজিরবিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করে তালা ভেঙ্গে বিএনপি অফিসে প্রবেশ করে, আসবাবপত্র ও কাঁচের গ্লাস ভাংচুর করে, গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কাগজপত্র লুটপাট করে। সেখান থেকে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, বর্ষিয়ান নারী নেত্রী সৈয়দা রেহানা ঈসা সহ বহু নারী কর্মীকে গ্রেফতার করে। সংঘর্ষের সময় ৪১ জনকে গ্রেফতারের পর রাতে পুলিশ বাদী হয়ে বানোয়াট মামলা দায়ের করে। গত শুক্রবার ১২ নারী নেত্রীকে জামিন দিলেও ২৯ জনকে জেল হাজতে পাঠায়।
পথ সভা থেকে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বিএনপি নেতারা বলেন, সরকারের পতন ঘণ্টা বেজে গেছে। হামলা চালিয়ে, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে পতন ঠেকানো যাবেনা। তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ফ্যাসিবাদী শাসক ও তার দোসররা পালাবার পথ পাবেনা।
এদিকে ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪১ তম শাহাদাত বার্ষিকীর কর্মসূচি বাঁধাগ্রস্থ করতে শনিবার দিবাগত রাতে পুলিশ অসংখ্য বিএনপির নেতাকর্মীর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা। এ সময় সোনাডাঙ্গা থানা যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদল সভাপতি ইবনুর রহমান ইমুল গ্রেফতার হন। পুলিশ সদস্যরা বাড়িতে দরজা ভাংচুর ও পরিবারের সদস্যদের সাথে চরম দূর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপি নেতারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে পুলিশী অপততপরতা বন্ধের জোর দাবি জানান। যে কোন মূল্যে ৩০ মে'র কর্মসূচি পালন করা হবে এবং কোন ধরনের বাঁধা আসলে তা দলীয় নেতাকর্মীরা প্রতিহত করবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ বিক্ষোভ মিছিলে স ম আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা, খান জুলফিকার আলী জুলু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুলু, শের আলম সান্টু, বদরুল আনাম, আশরাফুল আলম নানু, তৈয়েবুর রহমান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, শামীম কবীর, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশীদ মিরাজ সহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মহিলা দলের অর্ধ সহশ্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। তাদের স্লোগানে স্লোগানে মহানগরী খুলনার গুরুত্বপূর্ণ অফিসপাড়া, আদালত এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।