রাজপথ থেকেই সরকারকে ধাক্কা দিতে হবে : ড. খন্দকার মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৯ পিএম, ২৮ মে,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রাজপথ থেকেই এই সরকারকে ধাক্কা দিতে হবে এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সেই ধাক্কা দেয়ার সূচনা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ শনিবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফায়সালা হবে রাজপথে। এই রাজপথ থেকেই আমাদের অবৈধ সরকারকে ধাক্কা দিতে। আমাদের ছাত্রদল তাদের শরীরের রক্ত ঢাকার রাজপথে দিয়ে এই ধাক্কা দেয়ার আন্দোলনের সূচনা করেছে। আমি আশা করি যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্রদলের পাশে থেকে একই ইস্যুতে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের বিকল্প নাই।
তিনি বলেন, আমাদের এই আন্দোলনের ইস্যু সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। আমাদের ইস্যু একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ নিজের ভোট নিজে দিবে, ইভিএমের মাধ্যমে না। তাই আমাদের ইস্যু পরিষ্কার। এই ইস্যু যুবদলের, এই ইস্যু ছাত্রদলের, সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও সারা দেশের মানুষের। তাই আমি আহ্বান জানাবো যারা এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও দেশের জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চায় তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসুন।
ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার নিন্দা জানিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ছেলেদের পিটিয়ে যেভাবে রক্ত বের করেছে, আমাদের একজন ছাত্রী নেত্রীকে যেভাবে মারধর করেছে সে সকল ছবি পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আমাদের সমাবেশ থেকে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের জন্য নিন্দা জানাই, ক্ষোভ জানাই, ঘৃণা জানাই।
তিনি বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এ সকল অপকর্ম করছে। আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এই নেতাদের নির্দেশে যুবলীগ-ছাত্রলীগের পাণ্ডারা নিউ মার্কেটের ঘটনা ঘটিয়েছিল, পার পায়নি। তারা কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। আবরারকে যারা হত্যা করেছিল তারাও কিন্তু তাদের নেত্রী ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রেহায় পায়নি। বিশ্বজিৎকে যারা হত্যা করেছিল তারাও কিন্তু তাদের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রেহাই পায়নি। অতএব আমি তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা আজকে এই নির্দেশ তোমাদের দিচ্ছে তারা তোমাদের ধ্বংস করছে।
এর আগে শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুবদলসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে। ফলে জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবদলের পাশাপাশি খণ্ড-খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বেলা বড়ার সাথে সাথে সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এসময় পুরো প্রেসক্লাব ও আশেপাশের এলাকা সরকার বিরোধী স্লোগানে প্রকম্পিত করে তুলে যুবদল নেতাকর্মীরা।
এদিকে যুবদলের এই বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রেস ক্লাবের সামনে সতর্ক অবস্থানে ছিল বিপুল পরিমান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হয়।
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম ও উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে অংশ নেয়া যুবদল ও বিএনপির অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা জানান, বিএনপি’র আর পেছনে যাওয়ার রাস্তা নাই। আমরা চাই সরকার পতনের জন্য কার্যকর এক দফা কর্মসূচি। সেই কর্মসূচিতে আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে হলেও দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য তা করতে আমরা প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কয়েক দফায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। এ হামলার প্রতিবাদে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে যুবদল। এর আগে গতকাল শুক্রবার একই স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি।