ছাত্রলীগের ইন্ধনে বহিরাগত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে : ছাত্রদল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২২ পিএম, ২৫ মে,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০১:১৮ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ইন্ধনে বহিরাগত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা, চাপাতি, হকিস্টিক এবং বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ এই অভিযোগ করেন। এ সময়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জয়েলসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ইন্ধনে বহিরাগত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা, চাপাতি, হকিস্টিক এবং বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাহারা দেয়ার নামে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়তো বটেই শহরের ওই অংশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। তারা গুন্ডা বাহিনীর মতো মোটর সাইকেল মহড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে এবং ক্যাম্পাস জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠন হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ করে জানিয়েছে, তারা সেখানে মোটেও নিরাপদ অনুভব করছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যের পরিবেশ দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে। তবে সেটা এখন সকল সীমা অতিক্রম করেছে। আর এজন্যই আমরা উদ্ভূত এই পরিস্থিতি জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য; আজ কেন্দ্রীয় সংসদের পরামর্শে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে তাদের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থেকেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, মহান স্বাধীনতার ঘোষকের হাতে গড়া সংগঠন এবং তিন তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মাতৃস্নেহে লালিত সংগঠন। আমি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণও একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। ছাত্রদল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্রদল মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার মুখের ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে, বাংলাদেশ পেয়েছে একটি স্বাধীন পতাকা এবং স্বাধীন মাতৃভূমি। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সংগঠনের মুক্ত চিন্তা ও স্বাধীন মতামত প্রকাশের জায়গা। কিন্তু যখন দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে, বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা মার খাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা মার খাচ্ছে তখন দেশের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্র সংগঠন হিসেবে এর পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার দায় আমাদের ওপরও বর্তায়। আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য। আমরা মাননীয় ভিসি মহোদয়ের কাছে আবারও বিনীত অনুরোধ কররো, আপনি পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক। আপনার অভিভাবক সুলভ আচরণের মাধ্যেমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব। আপনার কাছে অনুরোধ, আপনি সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো সংগঠনের পরিচয়ে মূল্যায়ন না করে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী হিসাবে মূল্যায়ন করুন। তাহলে আপনি হতে পারবেন ক্যাম্পাসের সত্যিকারের একজন অভিভাবক। আর তা আপনার কর্তব্যও বটে। শুধুমাত্র ছাত্রদল নয়; সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন এবং সকল ছাত্র ছাত্রীরা আপনাকে একজন নির্দলীয় অভিভাবকের ভূমিকায় দেখতে চায়। আমরা বিশ্বাস করি আপনার দৃঢ় ভূমিকা এই ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে অনন্য ভূমিকা রাখবে। অন্যথায় আপনি ও আপনার কর্মকান্ড জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, আগামী ২৭-০৫-২০২২ তারিখে বিসিএস পরীক্ষা থাকায় আমরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার স্বার্থে আমাদের পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল স্থগিত করেছি। ইতিপূর্বে সংগঠন থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। দেশের সকল ছাত্র ছাত্রীদের বিসিএসসহ সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার স্বার্থে ছাত্রদলের সকল ইউনিটকে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন এবং ক্যাম্পাসে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম নিত্য দিনের মতো পরিচালনা করতে চায়। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত সকল ছাত্র সংগঠনের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা আপনাদের সহযোগিতামূলক আচরণ প্রত্যাশা করছি এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে আমাদের আদর্শিক রাজনীতি পরিচালনা করার সুযোগ পাবো বলে আশা রাখছি। আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা করে গণমানুষের পাশে দাঁড়াতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।