দেশটাই ‘ব্ল্যাকমেইলিংয়ে’ ঢুকে গেছে - গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৭ পিএম, ২৪ মে,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১২:১১ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
গোটা দেশ ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মধ্যে ঢুকে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের মালিকরা সরকারকে ব্ল্যাকমেইলিং করে। আর সরকার সংবাদপত্রের মালিকদের ব্লাকমেইলিং করে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী আর জমি ডাকাতরা মিডিয়ার মালিক। তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য এক একটা বিজনেস হাউজ চারটা পাঁচটা করে পত্রিকা চালু করে। যারা মানুষের রক্ত চুষে খায় তাদের হাতে এইসব পত্রিকা থাকলে দেশের দুর্গতি ছাড়া কোনো পথ নাই।
আজ মঙ্গলবার দলের যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আসসালাম চৌধুরী মুক্তি পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেয়ার মন্তব্যর সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুষ্টুমি করেই হোক বা এমনি হোক। একজনকে টুস করে ফেলে দেয়া আরেকজনকে চুবানো এইটা তো হত্যার হুমকি। এটেম টু মার্ডার। আমাদের যে এত আইনজীবী ফোরাম আছে তারা কি এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে? করে নাই। আর আমরা কোনো কথা বললে দেশের আনাচে কোনাচে খালি মামলাই হয়।
তিনি বলেন, আমি জানি আদালতে গেলে এই মামলা টিকবে না। যে দেশের আদালত সরকারের অপকর্মকে লালন পালন করে, সাফাই গায়। যে দেশে সরকারে দুর্নীতি, মুদ্রাপাচার, নারী নির্যাতন থেকে আরাম করে খুন গুম করে। আবার টকশোতে লোক ভাড়া করে সাফাই গায়, সেই দেশে আমরা কোন অবস্থায় আছি সেইটা বুঝতে হবে। এখন যদি আমরা হাশরের ময়দান পর্যন্ত অপেক্ষা করি তাহলে চলবে না। পৃথিবীতে আপনার দায়িত্ব আপনাকেই পালন করতে হবে। এখানে শুধু আসলাম চৌধুরীর মুক্তি পাওয়া বড় কথা না। গোটা জাতিই তো বন্দি। এই বন্দি দশা থেকে মুক্ত করতে পারলে তো সে নিজেই আপনার সামনে এসে দাঁড়াবে।
গয়েশ্বর বলেন, ১৪ সালের নির্বাচনটা কেমন হলো? কারও কারও মতে কুত্তা মার্কা। অথচ ১৪শ ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট যায় নাই। ভোটের বাক্স ভর্তি হয়ে গেছে। তারপর ১৫৩টা সিট আগের থেকে নাই। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে নাই। বিএনপি পারে নাই? ওই পারাটাই শেষ পারা, তারপর কি চেষ্টা করছি আমরা? কেন করলাম না আমরা। আমরা নেত্রীকে সম্মান করি শ্রদ্ধা করি। তার জন্য আমাদের আবেগ অনুভূতির কোনো অভাব নাই। বেগম খালেদা জিয়া যে হাঁটতে হাঁটতে জেলে গেলেন, আর বন্দি অবস্থায় জেল থেকে গেলেন বাসায়। আমরা কি করলাম? আমরা বক্তৃতা আর মুক্তি দাবি করছি কিন্তু কার কাছে করছি? শেখ হাসিনার কাছে?
তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিনই ঐক্যের কথা বলছি। একটা মানুষ পাইলাম না যে বলছে ঐক্য ছাড়া চলবে। তাহলে আমাদের আবার ঐক্যবদ্ধ হওয়াতে সমস্যাটা কি? একজনকে দাওয়াত দিলে আরেজন আসবেন না, তাহলে ঐক্য হলো কই?
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের তাদের ভয় পাবার কোনো কারণ নেই, তাদের যে বিচার হবে সেই বিচার থেকে মুক্তি পাবার কোনো উপায় নেই। আজকে আমরা ভয় পাই কাকে নিজেকে নাকি সরকারকে। নিজেকে যদি ভয় না পাই তাহলে সরকারকে ভয় পাবার কারণ কি? সরকারের আছেটা কি? একটা পুলিশ। ৭১-এ পুলিশ আর্মি মানুষ মারছে কিন্তু আত্মসমর্পণ করতে হইছে। আর পুলিশ কখনো জনগণের দাবির বিপক্ষে যায় না। আমরাই তো ঠিক মত রাস্তায় নামতাছি না, পুলিশকে দোষ দিয়ে লাভ কি? আমার লোক কম দেশে, বিরক্তও হতে পারে মানুষ, আবার লোক বেশি থাকলে আগেও যেতে পারে পিছেও যেতে পারে মানুষ। অকারণে আমরা ভয় পাচ্ছি।
সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বন্দি মানে বাংলাদেশটাই বন্দি। তাই আমরা বিএনপির কর্মী হিসেবে আমাদের কাজটা আমাদের করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানসহ আয়োজক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।