বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আইসিটি অ্যাক্টসহ সকল ধরনের নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করবে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৩ পিএম, ২২ মে,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৪৩ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সকল ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনপি আয়োজিত গণমাধ্যম সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় তিনি দলের এই অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন। মূল প্রবন্ধে ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’ প্রকাশিত র্যাংকিংয়ে গত ১ বছরে বাংলাদেশ ১০ ধাপ পিছিয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬২তম হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, এর পেছনে নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশগুলোকে দায়ী। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, আইসিটি অ্যাক্ট, দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্লাটফর্মস-২০১২, ওভার দ্য টপ (ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিষেবা প্রদান ও নীতিমালা-২০২১, অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট প্রভৃতির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এমনভাবে চেপে ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে যে তারা শুধু সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। মামলা ও হয়রানির ভয়ে বেশিরভাগ মিডিয়া সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞাপন বন্টনের বৈষম্য, বেতন বোর্ড বাস্তবায়নে মালিকপক্ষের অনীহা প্রভৃতি কারণে বেশিরভাগ গণমাধ্যমকর্মীকে চরম আর্থিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ফলে সত ও মেধাবী সাংবাদিকরা ধীরে ধীরে এই পেশার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে যখন স্বাধীনতার ৫০ বছর সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি ঠিক সে মুহূর্তে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ঘটনাগুলো ক্রমান্বয়ে ঘটছে। বর্তমান এ আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুপরিকল্পিতভাবে মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। একের পর এক যে আইন তৈরি করা হচ্ছে প্রেস ফ্রিডমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। মূলত ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়েছে। গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আরও ৪টি আইন করা হচ্ছে। সে আইনগুলো করা হলে কফিনের শেষ পেরেগ দেয়া চূড়ান্ত হবে। আমাদের সকলের উচিত সোচ্চার হওয়া, নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার ঘোষণা, আমরা সরকার গঠন করলে মুক্ত গণমাধ্যমের অন্তরায় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’সহ সকল ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করব। গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনো বিষয় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংস্থা প্রেস কাউন্সিলে ফয়সালা না করে কোনোভাবেই যেন আদালতে মামলা দায়ের করতে না পারেন সেটা নিশ্চিত করা হবে। আমরা বলেছি যে, গণমাধ্যমকে স্বাবলম্বী করার জন্য বিএনপি বিজ্ঞাপনের সুষম বন্টনের ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট সংখ্যক প্রকাশনা, প্রচারণা কিংবা টিআরপি’র ভিত্তিতে গণমাধ্যমগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার চিন্তাও বিএনপির রয়েছে। দেশের ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে দেশীয় গণমাধ্যমগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় সেটি নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও আমাদের (বিএনপি) রয়েছে। সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড সকল গণমাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব। দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে গোটা জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে, বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই জাতি বা রাষ্ট্রকে উদ্ধার করতে হলে একটা ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য সকল মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করতে আমরা যদি না পারি তাহলে এখান থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো পথ নেই। সে জন্য আমাদের সকলের দায়িত্ব, সাংবাদিকরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, রাজনীতিবিদরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন- এর মধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা যেন দেশে গণতন্ত্রকে পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আনতে পারি সেই উদ্যোগটা গ্রহণ করা উচিত। ক্ষমতার পরিবর্তনে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা খুব আশাবাদী। বাংলাদেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয়নি। টার্নেলের পেছনে আলো দেখছি বলেই পুনরায় আমরা উৎসাহিত বা উৎফুল্ল হচ্ছি তাই নয়। আমরা সব সময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছি, কাজ করে যাচ্ছি। সরকারে যখন ছিলাম তখনও করেছি, সরকারে নেই এখনও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের বিজয় অবশ্যই অর্জিত হবে। জেগে উঠতে হবে সকলকেই। নিজেকে রক্ষা করার জন্য, সাংবাদিকদের স্বার্থকে রক্ষা করার জন্য, মানুষকে রক্ষা করার জন্য, এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেগে উঠতে হবে, পরাজিত করতে হবে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিবাদী শক্তিকে।
দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী বলেন, গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও থাকে না। সুতরাং আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, পত্রিকা খুললেই দেখা যায় দেশের অবস্থা কতটা নাজুক। সিলেটে ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে। এক এমপি এলাকায় ঘোষণা দিয়ে ত্রাণ বিতরণ করতে গেছেন। ত্রাণের আয়োজন করা হয়েছে মাত্র ২০০ প্যাকেট। তিনি শুধু দুজনকে ত্রাণ দিয়ে বাকি নেতাদের ত্রাণ বিতরণ করতে বললেন। পূর্ব ঘোষণা দেয়ায় সেখানে যে লোক উপস্থিত ত্রাণের প্যাকেট সে পরিমাণ না থাকায় নেতাকর্মীরা মানুষ তাড়ানোর চেষ্টা করলেন, পারলেন না। পরে পুলিশ এসে মানুষকে পিটিয়ে সরানোর চেষ্টা করল। আসলে জনগণের উচিত ছিল তাদের ধাওয়া করা। এখন থেকে মানুষকে ধাওয়া দিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে একটা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে কিছু অঙ্গীকার করা হয়েছে। তাদের অঙ্গীকারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে পারি, আশ্বস্ত হওয়ারও চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু আমাদের অতীত আশ্বস্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নয়, বর্তমান তো নয়ই। স্বাধীনতার পর থেকে কোনো সরকারই সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমবান্ধব ছিল না, এখনো নেই। স্বাধীনতার পরে যারাই সরকারে এসেছে, প্রথমে আওয়ামী লীগ সরকার, পরবর্তীকালে বিএনপি, এরপর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ অথবা জাতীয় পার্টি, পরে আবার বিএনপি, আবার আওয়ামী লীগ, আবার বিএনপি এবং এখন আওয়ামী লীগ। আজকে যখন আমরা বর্তমান সরকারের নিবর্তনমূলক আইন, নিগৃহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অন্যায়-অবিচার এই নিয়ে কথা বলব, অবশ্যই বলব। কারণ আমাদের মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে যেসব বাধা সে বাধাগুলো দূর করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের যেমন দায়িত্ব আছে, রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব আছে। সোহরাব হোসেন বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ যা করছে তার সমালোচনা করব না, তার সমর্থন করছি সেটিও নয়। অবশ্যই মুক্ত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে, মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে যে বাধাগুলো আছে সেক্ষেত্রে বিরোধী দলের সমর্থন চাই, সহযোগিতা চাই। কিন্তু একসঙ্গে এই সর্তকবাণী উচ্চারণ করতে চাই, তারা ক্ষমতায় গেলে যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে- খুবই নিবর্তনমূলক আইন করেছে। এটি স্বৈরাচারী আইন। এর নিন্দা করি, প্রত্যাহারের দাবি জানাই। কিন্তু আইসিটি আইন যেটি সংশোধন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সালে, সেই আইনটি কিন্তু প্রথম চালু করা হয়েছিল বিএনপির আমলেই। শাস্তিটা আওয়ামী লীগ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সরকারি কাঠামোয় আমি জানি না এটি রাজনৈতিক নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন নাকি আমাদের প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়। প্রশাসন নিজেকে রক্ষা করার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কীভাবে প্রভাবিত করে, কেন প্রভাবিত করে এবং সেটি এখনকার বাস্তব অবস্থায় নিশ্চয়ই আপনারা জানেন। আমরা যে কথাটি বলতে চাই, আমরা যেন সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে পারি, সব সময় বলতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা চাই, আপনাদের যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, গণতন্ত্রের পক্ষে আপনাদের লড়াই সেই কথা আমরা তুলে ধরব। আবার সরকার যদি অন্যায় সিদ্ধান্ত নেয়, স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নেয়, কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করে বা করে থাকে অবশ্যই তারও প্রতিবাদ করব। আমরা চাইব যে, বিরোধী দলে থাকতে গণমাধ্যমের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের যে সখ্য তৈরি হয়, সেটি যাতে ক্ষমতায় যাওয়ার পর অব্যাহত থাকে। আজকে আওয়ামী লীগ যে ভাষায় কথা বলে, বিএনপির কোনো কোনো নেতা ক্ষমতায় থাকতে কিন্তু একই ভাষায় কথা বলতেন। আবার আজকে বিএনপি যে ভাষায় কথা বলে আশা করি আওয়ামী লীগ কোনো না কোনো সময়ে বিরোধী দলে আসবে তখন হয়ত এই ভাষায় সংবাদপত্রের বন্ধুত্ব চাইবে, সখ্য চাইবে। বিরোধী দলে আসবে তখন সংবাদপত্রের সমর্থন চাইবে। সার্বিক গণতান্ত্রিক পরিবেশ যদি আমরা আদায় করতে না পারি তাহলে বিচ্ছিন্নভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল বলেন, বাংলাদেশের প্রেসের অবস্থা খুবই মারাত্মক। এর কারণটা হচ্ছে উইপেন অব ল’ অর্থাৎ আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা। বাংলাদেশে অসংখ্য আইন আছে, যা আমাদের দেশে স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি..., প্রত্যেকটি আইন সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের জন্য পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে হুমকিস্বরূপ। প্রতিকূল একটা পরিবেশের মধ্যে আমরা এখন আছি। এই প্রতিকূল পরিবেশ থেকে উত্তরণের জন্য সবচেয়ে যেটা দরকার সেটা হচ্ছে- ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ প্রত্যেকটি আইনকে সংশোধন করতে হবে অথবা বাতিল করতে হবে। এদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থায় যারা ক্ষমতায় থাকবেন তারা যদি গণতান্ত্রিক না হন তাহলে আইন থাকুক বা না থাকুক সেদেশে ফ্রিডম অব প্রেস কখনো প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
প্রথম আলোর সোহরাব হোসেনের দেয়া বক্তব্য খন্ডন করে বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সোহরাব ভাই সঠিক তথ্য দেননি। সাংবাদিক জহুর হোসেন কারাগারে যাননি। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। একুশে টিভি বিএনপি সরকার বন্ধ করেনি। এটি টেরিস্টোরিয়াল সম্প্রচারের ইস্যুতে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের আমলে সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকান্ড, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়েরসহ সারাদেশে সাংবাদিকদের নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরেন বিএফইউজে’র এই শীর্ষনেতা।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করে গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরেছে সরকার। বহু সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমান, কনক সারোয়ারসহ অসংখ্য সাংবাদিককে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৭৮টি মানহানি মামলা দেয়া হয়েছে। অন্ধকারে গণতন্ত্র মরে যায়। তাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে জনগণকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, গণমাধ্যমের জন্য নতুন যে আইন করা হচ্ছে সে আইনে সাংবাদিকদের পরিচয় মুছে ফেলা হচ্ছে। আসলে বর্তমান সরকার একের পর এক কালো আইন করে সাংবাদিকদের ওপর সর্বোচ্চ দলন চালাচ্ছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে এ আইনগুলো করা হচ্ছে। আগে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে হবে, তাহলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও ফিরবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৭ মাস কারাগারে থাকার পর জামিন মুক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, এম এ আজিজ, নুরুল আমিন রোকন, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সরদার ফরিদ আহমদ, শহীদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, মুরসালিন নোমানী, শফিক আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।