এই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না - ড. মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৭ পিএম, ২১ মে,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩১ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
এই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নাকি সংলাপ করবে। স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সে নির্বাচনে যাবে না।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর সফতম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরাম এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
নাসির উদ্দিন পিন্টুকে স্মরণ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নাসির উদ্দিন পিন্টুকে সরকার তিলে তিলে হত্যা করেছে। পিন্টুর মতো ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ আমাদের অনেক নেতাকেও গুম এবং হত্যা করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে একদিন এই হত্যাকারীদের বিচার হবে। এদেশের জনগণই সেই বিচার করবে।
বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতুতে তুলে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে মোশাররফ বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় তারা ভালো নেই, ঘুম হয় না তাদের। ঘুম হয় না বলেই আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী গায়ের জোরে হোক অবৈধভাবে হোক সে প্রধানমন্ত্রী। তার মুখে এ ধরনের অসংলগ্ন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য আসে। যদি তা আগের রাতে ঘুম হতো তাহলে এ ধরনের বক্তব্য একজন মানুষ দিতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-বাংলাদেশের তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশে কি প্রমাণিত হয়? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জনগণের নেত্রী তাঁকে পদ্মা থেকে টুপ করে ফেলে দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা অভিযুক্ত করতে চাই, বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি তিনি দিয়েছেন। বেগম খালদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য দেশের জনগণের নিকট অনতিবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তা না হলে বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকারি হিসেবে, নির্দেশক হিসেবে আজকের প্রধানমন্ত্রীর বিচার এদেশের জনগণ করবে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপে অংশগ্রহণের প্রশ্ন উঠে না উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমরা যে নির্বাচন চাই সেটা হলো, আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে সেই কমিশনের সঙ্গে আমরা সংলাপ করবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। অতত্রব, এই নির্বাচন কমিশন সংলাপের আহবান করলে কি আর না করলেই কি, বিএনপি এই ব্যাপারে দুই পয়সার দামও দেয় না।
ড. মোশাররফ বলেন, কিছুদিন আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডয়েচে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন- তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। ৪ বার তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছে। অবশ্যই বলেন নাই যে, যেভাবে হোক হয়ে গেছেন। উনি আসলে বুঝে গেছেন আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এই সরকার আর টিকে থাকতে পারবে না।
ড. মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন-বিএনপি ক্ষমতা গেলে তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। আমি বলবো- বিএনপি আগামীতে যে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে, সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। সেই নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে যারা থাকবেন, তাদেরকে নিয়ে সরকার গঠন করবো। সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন বেগম খালেদা জিয়া। আর শেখ হাসিনা ডয়েচে ভেলে বলেছেন-তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। ওবায়দুল কাদেরকে বলেতে চাই, ভবিষ্যতে আপনারা যেদিন ক্ষমতায় আসবেন, সেই দিন আপনাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা জনগণকে জানান।
বিএনপির লক্ষ্য অর্জন বক্তব্য দিয়ে হবে না বলে মন্তব্য করে ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজপথে থাকতে হবে। সরকারকে হঠাতে প্রোগ্রাম হবে এবং কর্মসূচি আসবে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।