প্রতিবেশির বন্ধুত্ব চাই, কর্তৃত্ব মানবো না : গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৬ পিএম, ১৫ মে,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:২১ এএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সহযোগিতা জন্য গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সহযোগিতা জন্য গণতান্ত্রিক বিশ্বের প্রতি অনুরোধ করছি। আপনারা সহযোগিতা করুন।
তবে দেশের কে সরকার থাকবে কে আসবে, তা ঠিক করবে দেশের জনগণ। আমরা প্রতিবেশির বন্ধুত্ব চাই, সৎ বন্ধু চাই। কিন্তু কর্তৃত্ব মানব না। দিল্লী থেকে মানসিংহ এসে পরাজিত হয়েছিল এই ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জে। সিদ্ধান্ত নিন দেশের মানুষের সাথে থাকবেন, না লুটপাটকারিদের সাথে থাকবেন। মানুষের চোখের ভাষা বোঝান। দেশ কারও বাবার না।
আজ রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ময়মনসিংহ নগরীর হরিকিশোর রায় রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিরোধী নেতাকর্মীদের উপর হামলা-মামলা, গ্রেফতার ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশের মেঘা প্রকল্প থেকে দশ লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অথচ তিনি কানে শুনেন না, চোখেও দেখেন না। ফলে দেশের গুনবতি প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশিরা আর বহন করতে পারছেন না। তারা তাকে গাড় থেকে নামাতে চায়।
তাই নতুন করে শপথ নেওয়ার কিছু নেই জানিয়ে এই বিএনপি নেতা দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবদিক থেকে প্রস্তুতি নিন। বেগম খালেদা জিয়া বন্দি, দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি আরও বলছেন, আগামী বাংলাদেশ কোন পথে যাবে, ফয়সালা হবে রাজপথে। যার যার এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে দূর্গ গড়ে তুলুন। নিরবে আর অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করা হবে না।
এ সময় তিনি আরও বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেশের সংবিধান আমাদের অধিকার দিয়েছে। সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করাও সাংবিধানিক অধিকার। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আর আমরা মার খাব না, যেখানে আক্রমণ হবে সাথে সাথে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য নির্দেশ দিতে হবে না।
এ সময় সরকারের উদ্দেশ্যে প্রবীন এই বিএনপি নেতা বলেন, শ্রীলংকা থেকে শিক্ষা নিয়ে কেটে পড়েন। দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফেরত দিন। দেশের দ্রব্যমূল্যের বেড়েছে, লুটপাটের কারণে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। ধানের মূল্য সাতশ টাকা। অথচ ধান কাটার একজন কামলার (শ্রমিক) মূল্য পনের টাকা। মানে দুই মন ধানের দাম।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন দেশে এখন আর সভা-সমাবেশে বাঁধা নেই। এর পরদিনই ড.মোশাররফ হোসেনের সমাবেশে হামলা হয়েছে। মূলত তারা যা বলে, তার উল্টো বুঝতে হবে। এটাই আওয়ামীলীগ। সবাই বলছে আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠ হবে না। ইভিএম দিয়ে লাভ কি? আমরা আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করব না এবং সেই নির্বাচন হতে দিব না। জনগণ বার বার চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা ঠিক নয়, এখন সময় হয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম। এ সময় যৌথভাবে সভা পরিচালনা করে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু ও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. ওয়ারেস আলী মামুন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা: মাহাবুবুর রহমান লিটন, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার, শাহ নূরুল কবীর শাহীন, অ্যাড. আবুল বাসার আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চু, অ্যাড.ফাত্তাহ খান, আকতারুজ্জামান বাচ্চু, শাহ শিব্বির আহমেদ ভুলু, অ্যাড. এমএ হান্নান খান, দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের আহবায়ক লিটন আকন্দ প্রমূখ।
এদিকে সভায় ময়মনসিংহ উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক ভাবে বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মীদের মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগদান করে। ফলে বিএনপির এই সমাবেশকে ঘিরে জেলা সদরের বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের ঢল নামে নগরীজুড়ে। ফলে খন্ড খন্ড মিছিল নগরীর পথে পথে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।