রিমান্ড শেষে বিএনপি নেতা মকবুল কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ২৭ এপ্রিল,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৭ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ বুধবার তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক হালদার অর্পিত ঠাকুর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অপরদিকে তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দিন ধার্য করেন। এর আগে শনিবার (২৩ এপ্রিল) তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক হালদার অর্পিত ঠাকুর। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারও আগে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে তাকে নিউমার্কেট থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। গত ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী।
সংঘর্ষের সূত্রপাত নিউমার্কেটের ভেতরে থাকা ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামের দুই দোকান কর্মচারীর দ্বন্দ্ব থেকে। সেই দোকান দুটি সিটি করপোরেশন থেকে মকবুলের নামে বরাদ্দ রয়েছে। তবে কোনো দোকানই নিজে চালাতেন না মকবুল। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়েছেন দোকান দুটি। রফিকুল ও শহিদুল পরস্পর আত্মীয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়। দুই মামলায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া সংঘর্ষে নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন ও মুরসালিনের ভাই নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা করেন। এই চার মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০০ জনকে। তবে তিনটি মামলার মধ্যে শুধু পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি নেতা মকবুলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক ইয়ামিন কবীর। মকবুল হোসেন ছাড়াও এ মামলায় আরও যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।