চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি'র ইফতার মাহফিলে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী
বর্তমান ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার পক্ষে জনমত স্পষ্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৪৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ মনস্থির করে ফেলেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নেতৃত্বে বর্তমান ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার পক্ষে জনমত স্পষ্ট হয়ে গেছে। এখন কিভাবে শেখ হাসিনার পতন ঘটাব, সেই সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। বিদেশিদের সমর্থন আছে, দেশেও সমর্থন আছে। কিন্তু ফয়সালা হবে রাজপথে। ফয়সালা হতে হবে রাস্তায়। সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলের আগে অনুষ্ঠিত সভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।
ইফতার মাহফিলে বিশেষ মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজিব রন্জন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি দুটি সার্ভে রিপোর্ট পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। একটি সার্ভে হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান সাহেব আগামী নির্বাচনের পর যে জাতীয় সরকারের কথা বলেছেন সেটার পক্ষে কারা আর বিপক্ষে কারা। একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক চ্যানেল এই সার্ভে করেছে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এতে অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই সঠিক।
তিনি বলেন, আরেকটি সার্ভে করেছে ইকোনমিস্ট পত্রিকা। সারাবিশ্বে এই পত্রিকা খুবই জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য। আমরা যে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলছি, সেটার পক্ষে কারা আছে সেটা নিয়ে সার্ভে হয়েছে। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ বলেছে তারা নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের পক্ষে। সুতরাং জনমত বোঝার আর বাকি নেই। জনমত নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন নেই। জনমত গঠিত হয়ে গেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হতে হবে, আগামী বছর যেন আমরা ক্ষমতায় এসে ইফতার করতে পারি। এই মুহুর্তে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর আওয়ামী লীগ কোন পথে পালাবে, সেই পথ খুঁজে পাবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই দেশকে তারা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। সরকার যেখানে হাত দিচ্ছে সেখানে লুটপাট হচ্ছে।আগামীতে যদি দেশের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে জনগন দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভোট ডাকাত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাতে হবে। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হলে, মুক্ত হবে বাংলাদেশ। তাই আসুন আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগনকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত করি।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি'র আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই।
এই সরকারের অধীনে এখন সবকিছু ঊর্ধ্বগতি, নিয়ন্ত্রণহীন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া লালদীঘির ময়দানে বলেছিলেন, দেশ বাচাও, মানুষ বাচাও। ঠিক তেমনিভাবে সুদূর লন্ডন থেকে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একই ডাক "টেইক ব্যাক বাংলাদেশ" বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সরকার দেশের সব গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে আওবয়ামি অঙ্গ সংগঠনে পরিনত করেছে। তাই এই রাষ্ট্রের সংস্কার প্রয়োজন। রাষ্ট্র ও সাংবিধানিক সংস্কার করার জন্য জাতীয় ঐক্যমতের মাধ্যমে জাতীয় সরকারের রূপরেখা দিয়েছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। আগামী নির্বাচনে আওয়ামি লীগ সরকারকে আর ছাড় দেয়া হবেনা।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশিদ, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মো. মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মাহবুব আলম, অ্যাড. মফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মো. খান, ইকবাল চৌধুরী, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, নাজিম উদ্দীন আহমেদ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আবুল হাসেম, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, মো. কামরুল ইসলাম সহ বিশ দলীয় জোট, বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংবাদিক, গুম খুনের শিকার হওয়া পরিবার, পঙ্গুত্ববরণকারী নেতাকর্মী এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।