আ.লীগের ৩ নেতাকে পিটিয়ে আলোচনায় বদি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৭ পিএম, ২৩ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দীর্ঘদিন আলোচনার বাইরে থাকার পর নিজের দলের ৩ নেতাকে পিটিয়ে আবারও আলোচনায় টেকনাফের বহুল আলোচিত সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও একই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারের স্বামী আবদুর রহমান বদি। দলীয় বর্ধিত সভায় বক্তব্যের বিরোধীতা করায় পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিসহ তিন নেতাকে পিটিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলা হল রুমে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যেই হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বদির নেতৃত্বে তার ভাই আবদুশ শুক্কুর, নুর মোহাম্মদ ওরফে লাস্টিপসহ বদির ক্যাডার বাহিনী সভা চলাকালে হলরুমে ঢুকে একজনকে টেনেহিঁচড়ে মেঝেতে শুইয়ে ফেলেন। একেকজন তাকে একেক দিক থেকে ধরে তুলছেন আর ফেলছেন। আর শুক্কুর ও কয়েকজন সমানে বুকে, শরীরের নানা অংশে লাথি দিচ্ছেন।
মারধরের শিকার ওই নেতা হলেন- টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইউছুফ (মনো)। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রহারের শিকার হন পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক মো. ইউছুফ ভুট্টো ও উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক।
জানতে চাইলে হামলার শিকার মো. ইউছুফ (মনো) জানান, বর্ধিত সভা চলাকালীন সাবেক সংসদ সংসদ বদি পৌর কমিটিকে ডিঙ্গিয়ে বারবার ওয়ার্ড কমিটিকে প্রাধান্য দিয়ে কথা বলছিলেন। আমি (ইউছুফ মনো) বদির বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় সেখানে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বদি মঞ্চ থেকে নেমে হল রুমের বাইরে অপেক্ষমাণ তার ক্যাডার বাহিনীকে ডেকে আবার দ্রুত হলে ঢুকে নিজের নেতৃত্বে আমাকে কিল-ঘুষি মেরে মেঝেতে ফেলে লাথি দিতে থাকেন। এ সময় আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে যুগ্ন সম্পাদক ইউছুফ ভুট্টোও প্রহৃত হন বদি ও তার লোকের হাতে।
হলে উপস্থিত নেতারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই হতবিহ্বল হয়ে পড়ি। কেউ বদি ও তার ভাইদের এবং ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে তাদের ছাড়াতে না এসে দাঁড়িয়ে ঘটনা দেখছিলেন।
ঘটনাটি ভিডিও করতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হককে মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নেন বদির ক্যাডাররা। প্রতিহত করতে চাওয়ায় পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদ হোসেন মুন্নাকেও হামলার চেষ্টা করা হয়। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক টিম লিডার (উখিয়া-টেকনাফ) শাহ আলম চৌধুরী রাজা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ হয়েছে। বাইরে কোনো কিছু ঘটে থাকলে সেটা আমার জানা নেই।
হামলার ভিডিওর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কিছু এখনো চোখে পড়েনি। মূলত দলের সভা বিঘ্নিত হয় এমন কিছু সেখানে ঘটেনি।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হলে তারও উত্তর মেলেনি।