দলীয়করণে বিচার বিভাগ, ন্যায় বিচার পাচ্ছে না বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা - ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫২ পিএম, ১৫ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০২:১৫ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিচার বিভাগ দলীয়করণে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা ন্যায় বিচার পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গনে এক ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, '' আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশে একটা ছদ্মবেশি একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেজন্যেই তারা একে একে সমস্ত স্বাধীন যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করে ফেলেছে। সবার আগে তারা হাত দিয়েছে সেটা হচ্ছে বিচার বিভাগ।"
'' এই বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে আজকে জনগণের যে আশা-আকাংখা, দেশে মানুষ অন্তত তার প্রয়োজনের সময় যখন নির্যাতিত হবে রাষ্ট্র দ্বারা, তখন বিচার বিভাগের কাছে গিয়ে একটা রিলিফ পাবে। দুর্ভাগ্যের কথা আজকে সেই বিচার বিভাগকে তারা দলীয়করণ করে নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটা করে জায়গায় নিয়ে গেছে বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের যে রায়গুলো হয়, সেগুলো রায় হয়ে যাচ্ছে একেবারে জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, তারা ন্যায় বিচার পাচেছ না।"
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, '' অতি সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান যিনি রাজনীতির সাথে কখনই সম্পৃক্ত ছিলেন না, তার বিরুদ্ধেও দুদক একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার কার্য্ক্রম শুরু করবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।"
'' আমরা মনে করি এটা অত্যন্ত বেআইনি কাজ, আমরা মনে করি এটা শুধু বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু নয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।"
দেশের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, '' সারাদেশে একটা গণতন্ত্রহীন অবস্থা বিরাজ করছে। যখন আমাদের বুকের উপরে একটা বেআইনি একটা জোরজবরদখলকারী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা দখল করার পরে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধবংস করেছে, প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করেছে এবং বাংলাদেশের জনগণকে একটা অন্ধকার গহবরের দিকে ঠেলে দিয়েছে।"
তিনি বলেন, '' তিন বছর আগে ১৮ কোটি মানুষের নয়নের মনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সঙ্গে ইফতার করেছেন। আজকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনে রোষানলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে অন্তরীন করে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।"
'' আমাদের ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬'শর অধিক নেতা-কর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।"
এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে নেতা-কর্মীসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
মহানগর দক্ষিন বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এই ইফতার অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, তাহসিনা রশদীর লুনা, শ্যামা ওবায়েদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আফরোজা আব্বাস, অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে সদ্য কারামুক্ত ইশরাক হোসেন, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ অধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা ছিলেন।
ইফতারপূর্ব অনুষ্ঠানে দলের গুম হওয়া নেতৃবৃন্দের পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।
মহানগর দক্ষিন বিএনপির বিশাল আয়োজনের এই ইফতারে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থক অংশ নেন।