এই সরকার হলো ভোট ডাকাতের সরকার : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৩৬ পিএম, ৩১ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৩৩ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
আবারো আন্দোলনের হুমকি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়, তবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকেও বদলাতে হবে। কারণ ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তুলেছিল আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৭৩ দিন তারা হরতালও করেছিল। গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মানুষ পুড়িয়ে হত্যাও করেছিল। এতে লাভও হয়েছিল। কখনো আওয়ামী লীগ ভোটে জয়ী হয়, আবার কখনো বিএনপি জয়ী হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে আটক রেখেছে। একইভাবে তারেক জিয়াকে বিদেশে নির্বাসন দিয়েছে ফ্যাসিস্ট এই সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ডাকাতের সরকার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৭২ সালে তখনো একই কাজ করেছে আওয়ামী লীগ।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ হলো একটি চোরের দল। আওয়ামী লীগ হলো নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি। তা না হলে কেন বঙ্গবন্ধু আক্ষেপ করে বলেছিলেন বিদেশ থেকে আনলাম সাড়ে সাত কোটি কম্বল, আমার কম্বলটি গেল কোথায়! তাহলে কী বলা যায় না আওয়ামী লীগ একটি ডাকাতের দল, লুটেরার দল।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের ভোটের ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক দল বিএনপি কখনই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে রয়েছে থাকবে।
এর আগে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি ৩৫০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসনেই জয়লাভ করবে।
বিগত সময়ে দলীয় এবং বিরোধী মতপোষণকারীদের বিরুদ্ধে যত ধরনের হামলা, নির্যাতন, পুলিশি হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, সময় মতো এর প্রত্যেকটির জবাব নেওয়া হবে। গুম এবং খুনের সঙ্গে অভিযুক্ত সরকারি এজেন্সির প্রত্যেক কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
আন্দোলনের মাধ্যমে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে বলেও জানান তিনি।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের দল। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। দেশে এখনো আওয়ামী লীগ নেই, আছে প্রশাসন ও পুলিশ। হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে ২১ বছর পর দলটি ক্ষমতায় এসে দেশের সম্পদ লুটপাট করছে। আওয়ামী লীগ একটি মুনাফিকের দল।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান। এএনএম রোকনউদ্দীন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুলের ছোটভাই মির্জা ফয়সল আমিন, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, পয়গাম আলীসহ বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির নেতারা।
এরপর দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। সদর উপজেলা কমিটির সম্মেলন শেষে সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও পৌর কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক মামুন উর রশিদ।
সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কমিটি গঠন উপলক্ষে তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করে আগামী ৯ এপ্রিল ভোটের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ উপজেলা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ এন এম রোকন উদ্দিন ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সম্মেলনে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেত্রীবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।