রূপগঞ্জে ফুটপাতের চাঁদাবাজী নিয়ে যুবলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত-২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩২ পিএম, ৩০ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫১ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফুটপাতের দোকানের চাঁদাবাজির আধিপত্যকে কেন্দ্র কওে যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাতে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের বলাইখা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছে। এসময় উভয়পক্ষের ২০ টি বাড়িঘরে হামলা ভাংপুরের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন ভুইয়া ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের মাঝে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গোলাকান্দাইল নতুন বাজারের গার্মেন্টস এলাকায় ফুটপাতের দোকান থেকে যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের শ্যালক ফয়সাল নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিল। এলাকায় আধিপত্য নিতে যুবলীগ নেতা আল-আমিন তার লোকজন দিয়ে ফুটপাতের দোকানের আধিপত্য তার দখলে নিয়ে নেয়।
এর জের ধরে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আল-আমিন গ্রুপ ও কামাল গ্রুপ পিস্তল, রামদা, চাপাতিসহ এলাকায় মহড়া দিতে থাকে। এক পর্যায়ে দুই গ্রুপই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে দুই পুনরায় দুই গ্রুপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এসময় একপক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় কোরবান আলী নামে এক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
পরে রাতভর আরো কয়েক দফায় দুই গ্রুপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের অন্তত ২০ টি বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও প্রায় ৫ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। দুইপক্ষই প্রতিপক্ষ ছাড়াও নিরীহদের বাড়িঘরেও হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুইপক্ষের মেহেদী, মিঠুন, ম্যারাডোনা, আরিফ, ইয়াছিন, রাজীব, সানী, ফয়সালসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই দুই গ্রুপের কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। এই দুই গ্রুপের কারণে সাধারণ মানুষ এলাকায় শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। কয়েকদিন পর পরই তাদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই দুই গ্রুপের সকলের বাড়িতেই বিদেশী পিন্তলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের মজুদ রয়েছে। বলাইখা ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে কোন অভিযান পরিচালনা না করায় দুইপক্ষের লোকজনই বেপরোয়া হয়ে পড়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হলেই দোকানপাট বন্ধ করে ফেলতে বাধ্য হয় স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে গোলাকান্দাইল যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন ভুইয়া বলেন, কামাল হোসেনের শ্যালক ফয়সাল, শওকত আলী রিয়াজ, রাজীব ও কামাল হোসেনসহ সিএনজি ও মোটরসাইকেলে করে এসে তার ও লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা তার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ করেন। এসময় কোরবান আলী নামে তার এক লোকের ডান পায়ে গুলি লাগে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপাওে যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন বলেন, আল-আমিন ও তার লোকজন পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কামাল হোসেন ও তার শ্যালক ফয়সালসহ তার লোকজনের বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা ভাংচুর চালায়। এছাড়া তাদের বাড়িঘরকে লক্ষ্য করে গুলি করে ও বেশকয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে গতরাতে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং আজও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কোন সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না।