চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা
মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে আওয়ামীলীগ - আমীর খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ২৫ মার্চ,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১২:০৮ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭১ সালে যে আশা আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো সেগুলো এই আওয়ামী লীগ সরকার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যদি সত্য ঘটনাগুলো সামনে আসে তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকে না। আজকে যদি মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে বইয়ে লেখা হয়, তাহলে তারা জানে তারা যে মিথ্যাচার করছে, তা সকল ক্ষেত্রে ধরা পড়ে যাবে। কিন্তু এটাই সত্য যে ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাস বিকৃতি থেকে দেশটাকে মুক্ত করার জন্য সত্যিকার ইতিহাস তোলে ধরতে হবে।
তিনি আগামী ২৭ মার্চ রবিবার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচী সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান।
আজ শুক্রবার সকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ২৭ মার্চ রবিবার চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচী সফল করার লক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সব দেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, সবাই সব সময় তা সমুন্নত রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু বিশ্বের কোনও দেশে বাংলাদেশের মতো মুক্তিযুদ্ধকে বেচাবিক্রি করার কালচার নেই। আর এটা ক্ষমতাসীনরা যখন করে তখন সেটা ইতিহাস তো হই না, এটা প্রোপাগান্ডা হতে পারে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন মাইলফলক উন্মোচন করার জন্য ২৭ মার্চ সভা করছি। বিএনপির নীতি নির্ধারকরা অনেক আলাপ আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। জাতির ক্রান্তিকালে ইতিহাস বিকৃতি থেকে মুক্ত করার জন্য এই কর্মসূচি। যেহেতু মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস, সেহেতু এই মাসে শহীদ জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে হবে। একটি দল যখন আত্মসমর্পণ করেছে, সেখানে শহীদ জিয়ার আবির্ভাব ঘটেছে, তিনি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার যে কাজটি করেছিলেন সেটি জাতিকে জানাতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত চৌদ্দ বছর যাবৎ এই বিএনপির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একটা বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ কিন্তু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হয় না। কতটা অমানবিক এই সরকার! এই সরকারের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের নেত্রীকে পূর্ণ মুক্ত করতে হবে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের মধ্যে গণঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারকে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান। জাতির এক ক্রান্তিকালে ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তিনি এদেশের মুক্তিকামী জনতাকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবার সন্মুখ সমরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ জিয়ার শাসন আমল ছিল উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়াউর রহমান বহুবিধ সাফল্যের অধিকারী। স্বল্প সময়ের শাসনামলে নানা সঙ্কটে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতা শহীদ জিয়ার অন্যতম অবদান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিএনপি'র কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ হারুনের পরিচালনায় প্রস্তুতি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি'র আহবায়ক গোলাম আকবর খন্দকার, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপি'র আহবায়ক আবু সুফিয়ান, সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খাঁন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মো. মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক এনাম, এড. ইফতেখার মহসিন চৌধুরী, মজিবুর রহমান, হুমায়ুন কবির আনছার, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল হোসেন, এড. কাশেম চৌধুরী, লায়ন হেলাল উদ্দিন, চট্টগাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য নুরুল আমিন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, এড. আবু তাহের, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, সহ চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।