স্বাধীনতার ৫১ বছরেও এদেশের মানুষ তিমিরেই অবস্থান করছে - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৩ পিএম, ২৪ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩০ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
স্বাধীনতার ৫১ বছর অতিবাহিত হলেও এদেশের মানুষ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের রক্তস্নাত স্বাধীনতা অর্জিত হলেও মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা ফ্যাসিবাদের শ^াসরুদ্ধকর দুর্গের মধ্যে বন্দি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল পূর্ণ গণতন্ত্র, বাক-ব্যক্তি, লেখনি ও চিন্তার স্বাধীনতা। কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমান্বয়ে খর্ব হয়ে এসেছে। দেশে সমাবেশ ও চলাচলের স্বাধীনতা এখন বাধাগ্রস্ত। স্বাধীনতার ৫১ বছর অতিবাহিত হলেও এদেশের মানুষ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই অবস্থান করছে। বাংলাদেশের মানুষ ঔপনিবেশিক আমল তথা ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলের চেয়েও বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে। চারদিকে এক দম বন্ধ করা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশকে এক অচেনা গন্তব্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের কারণে ভোট, নির্বাচনসহ দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। স্বাধীনতার সকল অর্জনকে মুছে দিয়ে দুর্বিনীত দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে জনগণকে কন্ঠরুদ্ধ করার জন্য নানা কালাকানুন, গুম, অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের অমানবিক নিষ্ঠুরতার সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পার হলেও জাতীয় জীবন থেকে দূর হলো না অন্ধকার। তবুও সকল অরাজকতার মধ্যেও আমাদেরকে আবারো স্বাধীনতার মূল চেতনা ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র’কে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সুরক্ষা করতে হবে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনতে হবে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের স্বাধীনতা ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ জনগণ ও বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে গণদুশমনদের প্রতিরোধ করবে। মুক্ত করবে ‘গণতন্ত্রের মা’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচী :
১. ২৬ মার্চ শনিবার ভোর ৬টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের সকল ইউনিট কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন।
২. দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ২৬ মার্চ শনিবার সকালে সাভারস্থ জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে যাত্রা এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
৩. দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানস্থ কার্যালয় থেকে সকাল ৭-১৫ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
৪. একইদিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ঢাকায় ফিরে এসে মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। মাজার প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
৫. স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৩০ মার্চ বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৬. কেন্দ্রীয় বিএনপি মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পোস্টার প্রকাশ করবে।
৭. বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ সম্মিলিতভাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌর শাখায় স্থানীয় সুবিধানুযায়ী মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি করবে।
৮. মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সকল দলীয় কার্যালয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের ছবিসহ আলোকসজ্জা।
৯. মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে দৈনিক পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
১০. আগামী ২৬ মার্চ বেলা ৩টায় বিএনপির উদ্যোগে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘স্বাধীনতা র্যালি’ অনুষ্ঠিত হবে।