যারাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে, তাদের সঙ্গেই কাজ করবো - খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৮ পিএম, ১৯ মার্চ,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:০৫ এএম, ১১ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে আছে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে আছে, তাদের সঙ্গেই আমরা কাজ করবো। আমরা আগামী নির্বাচনের জন্য একতাবদ্ধ থাকবো।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনপির সাবেক দুই নেতা খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন আয়োজিত শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, এখানে দ্বিমত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অন্য বিষয়ে আমাদের দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু এই সরকারের পতনের (দাবি) সঙ্গে যাদের দ্বিমত থাকবে না, তাদের সঙ্গে কাজ করতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা একসঙ্গে করতে পারি, যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে পারি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য তো একটাই।
এই বিএনপি নেতা বলেন, আজকে আমার কষ্ট হয়, যখন জনগণ জানতে চান, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না। এই মুহূর্তে যারা জানতে চান বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারা কি চোখে দেখেন না? তাদের কী বোধশক্তি নেই! তাদের যদি বোধশক্তি থেকে থাকে, তাহলে তো বোঝার কথা বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন আছে কি না, যেখানে অংশগ্রহণ করার প্রশ্ন আসে। নির্বাচন থাকলে তো অংশগ্রহণের প্রশ্ন আসবে। যেখানে নির্বাচনই নেই দেশে, সেখানে অংশগ্রহণের প্রশ্ন কিসের? তাহলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কী নেবে না, এটা তো প্রশ্ন করার দরকার নেই।
আমীর খসরু বলেন, যদি নির্বাচন হয়, তাহলে সেটা হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। বিষয়টি পরিষ্কার, অতএব এই প্রশ্ন যাতে আর কেউ না করে। তিনি বলেন, একটা গোষ্ঠী আছে, তাদের এখানে স্বার্থসংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তারা হলো জনগণের বিপক্ষের শক্তি। তাদের স্বার্থ কী? কিছু তো খেতে হবে। খাওয়া-দাওয়া তো কিছু পেতে হবে। কিন্তু দেশের জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে, আইনের শাসন কেড়ে নিয়ে, জীবনের নিরাপত্তা কেড়ে নিয়ে? এই লোকগুলো কারা, তাদের তো চিহ্নিত করতে হবে। এরা চুরির উচ্ছিষ্টভোগী। আওয়ামী লীগ যা কিছু চুরি করে, তার উচ্ছিষ্ট ভোগের জন্যই এরা ঘুরঘুর করে। তাহলে তাদের চোর বলবেন না আপনি! সুতরাং তারা কী বলছে, এটা নিয়ে দেশের কারো মাথাব্যথা নেই। দেশের সাধারণ মানুষ জানে এরা কারা। এটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা সঠিক পথেই আছি। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে, আইনের শাসনের পক্ষে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে। এখান থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশে ২০২২ সালের মধ্যে একটা পরিবর্তনের ঝড় উঠবে। আমার মনে হয় এবছরই একটা পরিবর্তনের ঝড় উঠবে। এই ঝড় গণতন্ত্রের সপক্ষের, স্বাধীনতার সপক্ষের, এই ঝড় ১৯৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছিল তাদের সপক্ষে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের কাছে এই দেশবাসী যে প্রত্যাশা করেছিল তার কিছুই পায়নি। সাড়ে তিন বছরের যে শাসনকাল তার মধ্যে দুটি শব্দ আছে, একটি হলো মজুদদারি। এটা আমাদের শেখ মুজিবুর রহমান বলতেন মজুদদারদের ধ্বংস করতে হবে।
শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন লোকে পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি। সাড়ে সাত কোটি কম্বল আমার কম্বল কোথায়? শেখ মুজিবুর রহমানের কম্বল কোথায়? শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন এখন যে দুর্নীতি হচ্ছে তাতে আপনি কষ্ট পাইয়েন না। আপনার বাবার আমলেই আওয়ামী লীগের লোকজন কথা শোনে নাই। এখন আপনার সুসময়ে আপনার কথা শুনবে এটা ভাবা ঠিক হবে না। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও মওদুদ আহমেদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, জাতির জন্য রাজনীতির জন্য এই দুইজনের যে অবদান ঘণ্টার পর ঘণ্টা বক্তব্য দিলেও তাদের অবদানের কথা শেষ হবে না।
তিনি বলেন, তথাকথিত ওয়ান-ইলেভেনের সময় মৃত্যুপথযাত্রী হয়েও খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন গণতন্ত্রের সপক্ষে একটা ভূমিকা নিয়েছিলেন। খোন্দকার দেলোয়ার, মওদুদ আহমেদ আজীবন গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে গেছেন। আমরা যদি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই তাহলে এই দুইজনকে স্মরণ করতে হবে, বন্ধু ভাবতে হবে, নেতা ভাবতে হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে শোকসভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাতীয় দলের সভাপতি এহছানুল হুদা প্রমুখ।