তারেক রহমানের জনপ্রিয়তাকে ভয় পায় বলেই তার বিরুদ্ধে তাদের এত ক্ষোভ - নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৪ পিএম, ৭ মার্চ,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৪২ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
অবৈধ অসাংবিধানিক এক-এগারো সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে বিএনপি যায়নি উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার হাসিমুখে সেই শপথ অনুষ্ঠানে গিয়েছিল এবং তারা বলেছিল ওই সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল।
আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এক সময় বলেছে এক/এগারো সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল। আমরা বরাবরই বলি সেটা একটা অসাংবিধানিক অবৈধ সরকার ছিল। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার যে বিধান সেটা কার্যকর করার আগে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করতে হয়। ফখরুদ্দীন সাহেবকে নিয়োগের সময় সে আলোচনা হয়নি। কারণ তাকে নিয়োগ করা হয়েছে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের চাপের মুখে। ওই সরকার সংবিধান অনুযায়ী বৈধ ছিল না। সেই সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে বিএনপি ও তাদের সহযোগীরা যায়নি। বর্তমানে যারা ক্ষমতায় তারা এবং তাদের সহযোগীরা হাসিমুখে গিয়েছিল।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সেই (১/১১) সরকার অত্যন্ত গর্হিতভাবে, অন্যায়ভাবে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে গ্রেফতার করেছিল। আজকের এইদিনে, ২০০৭ সালে। যে অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেটা ছিল একটা চাঁদাবাজির অভিযোগ। কিন্তু সেই অভিযোগে যাকে অভিযোগকারী দেখানো হয়েছিল তিনি পরে লিখিতভাবে জানিয়েছেন তিনি সে অভিযোগ করেননি। সেই অভিযোগপত্রে যে দস্তখত সেটা তার না। এরকম কোনো অভিযোগ তার কখনও ছিল না, এখনও নাই। অর্থাৎ পুরোপুরি একটা মিথ্যা ডকুমেন্টের ওপর, বানোয়াট অভিযোগে তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে নানাভাবে নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছিল।
কেন তারেক রহমানের ওপর অত্যাচার করা হলো- প্রশ্ন করে নজরুল ইসলাম বলেন, এরা ছিল অমানুষ। ভাল মানুষ কখনও অন্যায় করে না। তারা শুধু তারেক রহমানকে নয়, তার ছোট ভাই যিনি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না তাকেও গ্রেফতার করেছিল।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অপপ্রচার করা হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘আমরা সেই অপপ্রচারের মোকাবিলা করতে পারিনি। এ ব্যাপারে মিডিয়ারও ভূমিকা আছে। আমাদের আরও বেশি সচেতন এবং সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।’ ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার অভিযোগপত্রে তারেক রহমানের নাম ছিল না। প্রথম দুটি চার্জশিটে তার নাম ছিল না। তাকে ঢুকানোর জন্য একজন পুলিশ অফিসার অবসর নিয়ে এলাকায় গিয়ে নৌকা মার্কায় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, পোস্টার ব্যানার করেছে। সেই আবুল কাহার আখন্দকে সেখান থেকে আবার নিয়ে এসে, পদোন্নতি দিয়ে তাকে আবার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হলো। সে মুফতি হান্নানকে কতদিন রিমান্ডে রেখেছিল শুনেছেন আপনারা। তাকে দিয়ে সাক্ষ্য দেয়ানো হলো। সেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একমাত্র সাক্ষী। আদালতে মুফতি হান্নান যাতে না যেতে পারে সে জন্য অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর করে দেয়া হলো। যাতে সে আদালতে না বলতে পারে যে, আমাকে জোর করে চাপ দিয়ে বলানো হয়েছে। যদিও সে বলেছে, কিন্তু সেটা আদালতে রেকর্ড হলে ভালো হতো, সে সুযোগ তাকে দেয়া হয়নি। তারেক রহমানের জনপ্রিয়তাকে ভয় পায় বলেই তার বিরুদ্ধে তাদের এত ক্ষোভ। ভয় পেলে কি লাভ হবে। যে ভয় পেতে ছিলেন ওই ভয়ই এখন আপনাদের খাবে।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে আমরা কেন নেতা মানি এই নিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগের) আপত্তি। আরে ভাই আপনারা আপনাদের দলের কাকে চেয়ারম্যান বানান, সেক্রেটারি বানান, এটা কি আমরা বলতে যাই নাকি? ওটা আপনাদের ব্যাপার। আর আমরা বিএনপিতে কাকে চেয়ারম্যান বানাবো, কাকে মহাসচিব বানাবো, এটা আপনারা বলার কে? আমরা তারেক রহমানকে ভালোবাসি, তার মধ্যে আমরা শহীদ জিয়ার চেহারা দেখি।
নজরুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমান দিনরাত পরিশ্রম করেন। প্রতিদিন কত জায়গায়, কত সংগঠনের সাথে তিনি কথা বলেন জানেন? আমরা ঢাকা থেকে বিএনপির যত লোককে চিনি না, তিনি লন্ডন থেকে তার চেয়ে বেশি লোককে চেনেন। আমরা যত লোকের সাথে কথা বলি না, তিনি লন্ডন থেকে তার চেয়ে বেশি লোকের সাথে কথা বলেন। তারপরে তিনি নেতা হবেন নাকি ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদের কথামতো আর একজনকে নেতা বানাতে হবে? কেন ভয় এত তারেক রহমানকে। লাভ নাই, শহীদ জিয়া আমাদের নেতা, খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রী এবং তারেক রহমান আমাদের নেতা এবং ভাই। আমরা তাকে আমাদের মাঝে চাই। আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ। তারেক রহমানকে আমাদের মাঝে নিয়ে আসবো।
বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই শেখ হাসিনার পতন ঘটবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। দেশের মানুষ বাকস্বাধীনতা ফিরে পাবে।
মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন আলম, এবিএম মোশাররফ হোসেন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সহকারী সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ।