ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণে বাংলাদেশের অবস্থান ‘জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থি - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৪ পিএম, ৪ মার্চ,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩১ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণে বাংলাদেশের অবস্থান ‘জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থি’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।
আজ শুক্রবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, এই আক্রমনকে ইউক্রেনের ওপর চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ এবং তার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করে বিএনপি। এই ধরনের আধিপত্যবাদী ও সস্প্রসারণবাদী তৎপরতা জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী অপরাধ। এই আক্রমণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি। বিএনপি মনে করে দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত জনমত গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার বিষয়ক মূল স্রোতের সাথে মিশে আছে। কিন্তু দেশের ক্ষমতাসীন সরকার তার ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে দেশবাসীর জনমতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ভোটদানে বিরত থেকেছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান ঘোষিত গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের নীতিমালা পরিপন্থি। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি জাতিসংঘের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে প্রবাহমান বিশ্বজনমত ও মূল্যবোধের পক্ষে বিশ্বের সকল শক্তিকে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করছে। যুদ্ধরত দুই দেশের চলমান আলোচনার ধারাবাহিকতায় যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি বিএনপি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে।
গত ৭ দিন ধরে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ‘অমানবিক’ আক্রমণে ১০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু এবং শত শত নিরীহ ইউক্রেনবাসীর সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নাবিক নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউক্রেন যুদ্ধে দলের অবস্থান পরিষ্কার করেন মহাসচিব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ইউক্রেনসহ যেকোনো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মৌলিক অধিকারকে শ্রদ্ধা করে এবং তার সীমা লঙ্ঘনকে বিরোধিতা করে। বিএনপি সবসময়ই সকল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে প্রবাহমান বিশ্ব জনমতের পক্ষে। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে জাতিগতভাবে নির্মূল করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও সরকার একই ভাবে দেশবাসীর আশা আকাক্সক্ষার বিপরীতে ভূমিকা নিয়েছিল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে কার্যকরী অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকান্ডে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে যা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলছে। ইউক্রেনের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দুরবস্থা ও পোল্যান্ডের সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে অবস্থান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকার যে অবস্থান নিয়েছে সেই অবস্থান থেকে দেখতে পারছি তাতে মনে হয় না যে, তাদের দৃষ্টিতে এই বিষয়গুলো বিবেচনায় আছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।