বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে স্যাংশন দিবে - আমানউল্লাহ আমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫২ পিএম, ২ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:২১ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, বর্তমান সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। এ সরকার গণতান্ত্রিক সরকার নয়। তারা অবৈধ, মিডনাইটের সরকার। এরা দুর্নীতিতে আজকে ছেয়ে ফেলেছে। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের এক কর্মী দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সুতরাং আওয়ামী লীগ নেতারা কী করেছে বুঝেন। তারা গুম খুন রাহাজানির পথ বেছে নিয়েছে। আজ ইলিয়াস আলী কোথায়, জবাব দিতে পারবে, পারবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির যাদের টার্গেট করেছে তাদেরই গুম খুন করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গুম যারা হয়েছে তাদের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই রনিকে কী করা হয়েছিল আপনারা জানেন। এ সরকারের কাছে কিছুই নিরাপদ নয়। তারা শুধু প্রশাসন দিয়ে বেঁচে আছে। শেখ হাসিনার পায়ের নিচে মাটি নেই। আমেরিকা এ সরকারের বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের স্যাংশন দিয়েছে। তাদের সাথে কেউ নেই, থাকবে না। দুইদিন পরে বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে স্যাংশন দিবে। প্রধান বিচারপতি আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আজ তাকে বিভিন্ন ভাবে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
আজ বুধবার বিকেলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া শহীদ মিনার এলাকায় জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, জেলা মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক ও নাসিক কাউন্সির আয়শা আক্তার দিনা প্রমুখ।
আমান বলেন, আজ চালের দাম, তেল, পানি, গ্যাস বিদ্যুত, পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। আজকের এ সমাবেশ জনগণের স্বার্থে, বিএনপি এবং তারেক রহমানের স্বার্থে নয়। এ সমাবেশ জনগণের স্বার্থে। আজকে ডিজেলের দাম বেড়েছে, বাস ভাড়া বেড়েছে। টাকা যাচ্ছে জনগণের পকেট থেকে।
তিনি বলেন, আজকের এ প্রধানমন্ত্রী বলেছিল দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। চাল কত আজকে, তারা ঘরে ঘরে চাকরি দিবে বলেছিল। আজকে চাকরি নেই। নারায়ণগঞ্জের মাটি উর্বর মাটি। গত ২০১৪ সালে আপনারা ভোট দিতে পারেননি। ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট হওয়ার কথা, ২৯ ডিসেম্বরেই ভোট হয়ে গেছে। এই যে আপনারা ভোট দিতে পারলেন না। সেকারনে এ সরকারের জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতা নেই। সেকারনেই আজ সবকিছুর দাম বাড়াচ্ছে। এগুলো ঢাকতেই তারা নির্বাচন কমিশনের নাটক করছে। সার্চ কমিটির ক্ষমতা নেই শেখ হাসিনার পছন্দ ছাড়া নির্বাচন করা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, একজন সেনাপ্রধান ও শহীদ রাষ্ট্রপতির স্ত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতারাও বিদেশে চিকিৎসা নেয় অথচ বেগম জিয়া বিদেশে চিকিৎসা পাচ্ছে না। কারন তারা বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। একারনে খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে এবং তারেক জিয়াকে মামলা দিয়েছে। তারেক রহমান বলেছে বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথের বিকল্প নেই। আরেকটি স্লোগান দিয়েছেন তিনি, সেটা হল টেক ব্যাক বাংলাদেশ। আমরা খালেদা জিয়ার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। সেজন্য ফয়সালা রাজপথে করতে হবে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সেদিন রফিক জব্বাররা রক্ত দিয়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। একাত্তরের লক্ষ লক্ষ লোকের রক্তের বিনিময়ে জিয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। আজকের এ স্বৈরাচার, যারা ভোট না দিয়ে পার্লামেন্টে বসে আছে, দেশের জনগণ এ সকল এমপি মন্ত্রীদের সংসদ থেকে বের করে আনবে। শেখ হাসিনাকে জনগণ গণভবন থেকে বের করে আনবে। বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিবে, তারা পছন্দ অনুযায়ী নেতা নির্বাচন করবে। এ নাটকের নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে না। আগামী দিনের যে আন্দোলন আসবে সে আন্দোলনে প্রয়োজনে আমরা রাজপথে শহীদ হব।
নারায়ণগঞ্জবাসীর মনে আছে, যেদিন আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গড়ে তুলেছিলাম। এই আদমজীতে ছাত্র-শ্রমিক সমাবেশ হয়েছিল। সেদিন কাঁচপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত বাশের লাঠি নিয়ে অবরোধ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ বন্ধ হয়ে যাবে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা নেই রাস্তা চালু করার। আপনারা নিজের গায়ের রক্ত দেয়ার জন্য প্রস্তত থাকেন।
তিনি বলেন, আমার সাথে আপনাদের শপথ করতে হবে। আপনারা দুহাত তুলে আল্লাহর নামে শপথ করুন, এ অবৈধ সরকারের পতন না ঘটিয়ে আমরা কেউ ঘরে ফিরব না। জনগণের ভোটের অধিকার কায়েম করে ঘরে ফিরব। আমাকে যে ওয়াদা করলেন, সকল জায়গা থেকে আপনারা বেরিয়ে আসবেন। আজকেও ভুলতা তেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। এই শেখ হাসিনার গদি জ্বালিয়ে ছাড়খার করে দিতে হবে। বিজয় আমাদের সন্নিকটে।