নির্দলীয় সরকারের ঘোষনা দিলে একজন মন্ত্রীও দেশে থাকবে না : মেজর হাফিজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৫ পিএম, ১ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:২৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, কথা দিয়েছিলেন ১০ টাকা কেজি চাউল খাওয়াবেন এখন সেটা ৭০ টাকা কেজি খাওয়াচ্ছেন। এখন আমরা দুর্নীতিতে প্রথম স্থানে আছি। শুধু বক্তব্য দিয়ে এই সরকারের পতন, দুর্নীতি ও দ্রব্য মূল্যের দাম কমানো যাবে না। এটার জন্য সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। দুর্নীতির জন্য দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে এটা আমাদের সবাইকে অনুভব করতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যাদের নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিলো তারা কিন্তু পালিয়ে গিয়েছিলো। তৎকালিন সময় মুক্তিকামি জনতার আশার ফলস শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তার নেতৃত্ব আমরা গ্রামগঞ্জে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। আমার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উত্তসূরি এই বিশ্বাস জনগনের মনে স্থাপন করতে হবে।
গতকাল সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতার লোভে দেশ স্বাধীন করেননি। তিনি স্বাধীনতার পর তার কর্মে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের অদক্ষতার কারনে এদেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়ে ছিলো। তারা দেশে বাকশাল কায়েম করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে চেয়ে ছিলো। সেই ধারাবাহিকতায় এখনও দেশ পরিচালিত হচ্ছে। তারা দেশের সম্পদ লুন্ঠন করে এখন কানাডায় বেগমগঞ্জ প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। আমি দুইবার মন্ত্রী ছিলাম কই আমারতো দেশের বাইরে কোন সম্পাদ নাই। আর আমরা যখন সরকার গঠন করতে পারি নাই, কোথাও তো পালিয়ে যাই নাই। দেশেই তো ছিলাম। কিন্তু যদি একবার ঘোষনা আসে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন পরিচালিত হবে। নির্বাচনের প্রয়োজন নাই, দেখবেন একজন মন্ত্রীও দেশে থাকবে না। সবাই দেশ ছেড়ে পালাবে।
তিনি আরও বলেন, যখন আমি ছাত্র ছাত্রীদের দেখি তখন আমার ৭১ সালের বীর সন্তানদের দেখতে পাই, যাদের বুকের রক্তের বিনিময় আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের আচরন দেখে আমি অভাক হই, তারা এখন ফেসবুক আর মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে অথচ দেশের চারপাশে ধর্ষন, গুম, খুন, দুর্নীতির মহা উৎসব চলছে সেখানে তাদের কোন প্রতিবাদ দেখছি না। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, মেধাবী ছাত্র ত্বকীকে হত্যাকরা হয়েছে, সাগর রুনীর হত্যার বিচার হচ্ছে না, বিডির বিদ্রোহের নামে ন্যাক্কার জনক হত্যা সংগঠিত হলো সব কিছুই মাটি চাপা পরছে বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রনের কারনে। এখন চাকুরী পেতে হলে হয় গোপালগঞ্জের হতে হবে নতুবা ছাত্রলীগের সদস্য হলেই চলবে কোন ইন্টারভিউর প্রয়োজন নাই। আর যারা মেধাবী ছাত্র তাদের ভবিষ্যত্ব শুন্য।
দেশের জনগণের সাথে প্রত্যারোনা করা হচ্ছে, সরকার এখন সেনাবাহিনীদের দিয়ে ব্রীজ নিমার্ণের কাজ করাচ্ছে তাহলে দেশের জন্য যুদ্ধ করবে কে। এ সব কিছুই প্রতিবেশী সরকারের সিদ্ধান্তে হচ্ছে, বড় লজ্জা লাগে যখন দেশের মন্ত্রী বলে ভারত হচ্ছে স্বামী আর আমরা হচ্ছি স্ত্রী। এই অবস্থা থেকে উত্তোলন শুধু বিএনপির দায়িত্ব নয় এটা দেশের প্রতিটা নাগরিকের দায়িত্ব। আপনার দেশ আপনাকেই রক্ষা করতে হবে। যে দেশে গণতন্ত্র থাকে না সে দেশের মানুষের কোন মূল্য থাকে না।
প্রধানবক্তা হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ৭১ থেকে ৭৫ সালে যেভাবে এ দেশের মানুষকে শোষন করা হয়েছে। ঠিক এই ভাবে দেশের মানুষকে শোষন করা হচ্ছে। এই সরকার জানে এই দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে হলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখতে হবে। তাই মিথ্যা মামলা দিয়ে আপোষহীন নেত্রীকে বন্দি করা হয়েছে। এর জবাব এই দেশের মাটিতেই দিতে হবে সেই দিন বেশি ধুরে নয়। কারন এটা লাখ শহীদের রক্তের বিনিময় গড়া দেশ আর যার জন্ম না হলে এ দেশে স্বাধীন হতো না তিনি হলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তার উত্তসূরি হিসেবে দেশের জনগণকে নিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আবার একটি যুদ্ধ করবো।
মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি এ্যাড. আবুল কালামের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় এ বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিরু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা মজিদ খন্দকার, সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান, এ্যাড. জাকির হোসেন, ফখরুল ইসলাম মজনু, আতাউর রহমান মুকুল, হাজী নুরুউদ্দিন, এ্যাড. রিয়াজুল ইসলাম আজাদ, এ্যাড. রফিক আহম্মেদ, হাজী ফারুক হোসেন, মনির খান, এ্যাড. সরকার হুমায়ুন কবির, আয়সা সাত্তার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাসিক কাউন্সিলর আবুল কাউছার আশা, দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল মাষ্টার, মহানগর বিএনপি নেতা আল-মামুন, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, আইন বিষযক সম্পাদক এ্যাড. আনিছুর রহমান মোল্লা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা.মুজিবুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শহীদ মেম্বার, যুববিষযক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন শোখন, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, যুগ্ম-আহবায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, শাহেদ আহমেদ, নাজমুল হক রানা, আলী ইমরান শামীম, শহীদুজ্জামান, আলম, ফয়েজ উল্লাহ সজল, মানিক বেপারী, খোকন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাসিক কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম ছক্কু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, সাধারণ সম্পাদক সুমি আক্তার, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, সাধারণ সম্পাদক আয়সা আক্তার দিনা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডলি আক্তার, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু প্রমুখ।