‘ইসি গঠন’ প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সন্তুষ্ট - কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৬ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে একটি অনন্য মাইলফলক। জনগণের অভিপ্রায় ও আইন অনুসরণ করেই প্রথমবারের মত একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে দেশবাসীর নিকট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংবিধানের আলোকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তারই ফলশ্রুতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন প্রণিত হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশনের সকল কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা। আমরা আশা করি, নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের সম্মানিত সদস্যগণ তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন। দেশের মানুষ যাতে ভোটের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন। নতুন নির্বাচন কমিশনে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই কর্মজীবনে দক্ষতা, সততা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে সুনামের সাথে কাজ করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, তারা অতীতে যে যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখিয়েছেন, ভবিষ্যতেও সেভাবে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন হয়েছে এবং সে আইন অনুসরণ করেই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে এটি একটি অনন্য মাইলফলক। সফল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে জাতির অভিভাবক হিসেবে এ আইন প্রণয়নে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট ছিলেন। রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে সংবিধান অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ সাধুবাদ জানালেও বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে চিরাচরিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই, তারা এটি মানেন না। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির প্রতি দেশের জনগণের কোনো প্রকার আগ্রহ নেই এবং তারা সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন ও হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের ফলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়। তাদের লক্ষ্য নির্বাচন নয়, হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা। দেশের জনগণ তাদেরকে বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিএনপিকে এদেশের জনগণ কেন ভোট দেবে? তাদের নেতা কে? দন্ডপ্রাপ্ত আসামি কী প্রধানমন্ত্রী হতে পারে? তাদের প্রধান দুই নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত আসামি তো নির্বাচন করতে পারে না। তাহলে কার নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? এ প্রশ্নের উত্তর বিএনপি জানে না। তাই বিএনপির দন্ডপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেই তারা আজ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। বিএনপি অতীতে ক্ষমতায় এসে জনগণের কোনো কল্যাণ করেনি। দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি। তারা দেশ পরিচালনার নামে দেশের মানুষের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে। হাওয়া ভবন খুলে জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি বার বার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সংবিধানকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্রের রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করেছে। সংবিধানকে বার বার ভূলুণ্ঠিত করে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং গণ রায়কে উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য বার বার ষড়যন্ত্র করেছে। বিএনপি কখনো নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করে নাই। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই সংবিধান ও আইনের বিধি-বিধান ভূলুণ্ঠিত করে অসাংবিধানিক পন্থায় জনগণকে জিম্মি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছে।