পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য স্ববিরোধী, দেশের সম্মানহানি ঘটেছে - আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২০ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৩৭ এএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
জার্মানির মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে গত শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলের বিদেশ বিষয়ক কমিটির এই প্রধান মনে করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের অন্যদের বক্তব্যের স্ববিরোধী এবং আন্তর্জাতিক একটি মঞ্চে তিনি দেশের সম্মানহানি করেছেন। পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন সারা দুনিয়ার সবাইকে কমবেশি ভোগাবে বলে জানিয়েছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব মত প্রকাশ করেন তিনি। গত শনিবার জার্মানির মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের ‘চীন যেভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়াড জোটগুলো তেমনটা দিতে পারবে কিনা’, এমন বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে কথা বলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অডিয়েন্স থেকে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথাগুলো বললেন পাবলিকলি, এতে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়। পলিসি ইস্যুতে জিও-পলিটিক্স, জিও ইকোনমিক যে বিষয়গুলো আছে, এগুলো নিয়ে বিদেশি দায়িত্বশীলদের সঙ্গে অবশ্যই আলোচনা হতে পারে। কিন্তু তিনি এটাকে পাবলিক ডোমেইনে নিয়ে গেছেন। দ্বিতীয়ত, তার বক্তব্যের পর একটা পাবলিক ডোমেইনে যেভাবে উপস্থিত ব্যক্তিরা রেসপন্ডস করেছে, আমি মনে করি, এটা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক হয়নি।’
আমির খসরু আরও বলেন, ‘তারা যে টোনে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যেভাবে তা ঘটেছে, যে পথে প্রতিক্রিয়া এসেছে, তাতে আমি মনে করি না, এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক বা সম্মানজনক হয়েছে।’
তৃতীয়ত উল্লেখ করে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু বলেন, সরকার একদিকে বলছে তারা উন্নয়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন—টাকা রাখার জায়গা নাই। টাকা রাখার জায়গা না থাকলে সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ‘আমাদের টাকাও নাই, প্রযুক্তিও নাই।’ এতে কী দেশের ভাবমূর্তি বাড়ে নাকি কমে, প্রশ্ন করেন খসরু।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘তার কথা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি কি অনুমতি চাচ্ছেন, কার থেকে টাকা নেবেন কার থেকে নেবেন না? এরকম একটা ইস্যু তার আলোচনা থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমরা কার কাছ থেকে টাকা নেবো, কার থেকে নেবো না, তার টোনে মনে হচ্ছিলো—তিনি তাদের অ্যাপ্রুভাল চাচ্ছেন। কেন তিনি এভাবে বলেছেন, আর কেন তিনি এই ইস্যুটিকে পাবলিক ডোমেইনে নিয়ে যাবেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে খসরু বলেন, ‘এটা তো কোনও ডিপ্লোমেসিতে পড়ে বলে আমার জানা নেই। তিনি বাংলাদেশের প্রধান ডিপ্লোম্যাট। আমি মনে করি, তিনি পুরোপুরি আন-ডিপ্লোম্যাট একটি কাজ করেছেন জার্মানিতে। আমি মনে করি না, এতে বাংলাদেশের সম্মান বেড়েছে। বরং দেশের সম্মান কমেছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য স্ববিরোধী।’
ইউক্রেন ইস্যুতে আমির খসরু বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টি একটি খারাপ খবর। এটা সারা পৃথিবীর জন্য খারাপ খবর। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর সারা পৃথিবীতে যে সময়টিতে রিকভারি করার সুযোগ এসেছে, তখন এই খবর অবশ্যই ক্ষতির কারণ।’
‘এটা কাউকে বেশি হার্ট করবে’, উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, ‘প্রত্যেক দেশই সাফার করবে। জিওপলিটিক্যাল টেনশন বাড়বে। অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেবে। বিশেষত, সাপ্লাই চেন আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তেল, এনার্জি প্রাইস প্রভাবিত করবে। সবকিছুতেই এটা খারাপ প্রভাব ফেলবে।’