সার্চ কমিটি সরকারের ‘নাটক’ - খন্দকার মোশাররফ হোসেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৩ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৮ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
সার্চ কমিটি সরকারের ‘নাটক’ বলে মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ শুক্রবার সকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার থাকলে সার্চ কমিটি তাদেরই হবে। এই সার্চ কমিটিকে শেখ হাসিনা বা সরকারের পক্ষ থেকে যাদের নাম দেবে তারাই নির্বাচন কমিশনার হবে। এটাতে অংশগ্রহণ করা, এটাতে মাথা ঘামানো আমরা মনে করি এটা অর্থহীন। তাই আমরা এই ব্যাপারে কোনো গুরুত্ব দেই না।’
‘এই (সার্চ কমিটি) যে সরকারের নাটক। এই নাটক হচ্ছে- এই সরকার আবার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আরেকটি সেই পুরনো সেই ডাকাতি-চুরির নির্বাচন করার জন্য।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, এদেশের মানুষ দেখেছে, এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে আর নয়। আজকে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বও কিন্তু বলে দিয়েছে, আমাদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছে, সিগন্যাল দিয়ে দিয়েছে- এনাফ ইজ এনাফ। আর এটা চলবে না।’
‘এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এটা আমরা বিএনপি ও ২০ দলের নেতারা সকলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আগেই ঘোষণা করেছি যে, শেখ হাসিনার অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাবো না। শেখ হাসিনার অধীনে বিগত দুটি নির্বাচন প্রমাণিত এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। আমাদের দাবি অতিবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যত শিগগিরই নির্বাচন অনুষ্ঠান করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আর যদি না করে যেকোনো স্বৈরাচারী সরকার যে পথে বিদায় হয়েছে তাহলে সেই রাজপথকে আমরা বেছে নিতে বাধ্য হবো। আপনারা এখানে অনেকে বলেছেন, ডাক দেন। ইনশাল্লাহ সেই ডাক দেয়ার সময় সামনে আছে।’
‘আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। যার যার অবস্থান থেকে প্রয়োজনে যুগপতভাবে একই ইস্যুতে আমরা আন্দোলন করবো। সময়ের সেই স্রোত একত্রিত হয়ে একসাথে মিলিত হয়ে এই সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইনশাল্লাহ বিদায় নিতে বাধ্য করব। সেই আন্দোলনের জন্য সকলে প্রস্তুত হোন।’
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।
‘পুলিশপ্রধানের জার্মানি যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘পুলিশের বিছানার চাদরের রঙ কী হবে সেটা দেখতে একজন পুলিশপ্রধান জার্মানিতে যাবেন রঙ পরীক্ষা করার জন্য। আমরা যে এতদিন বলছি, এই সরকার নাকি আইটির জন্য একটা স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছে। এই আইটির যুগে কাউকে এতদূর গিয়ে কি রঙ পরীক্ষা করতে হয়? সেকেন্ডের মধ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে রঙ সামনে চলে আসে, আমি এই রঙটা পছন্দ করি তা সেকেন্ডের মধ্যে এই মতামতটা দেয়া যায়। এর জন্য কী জার্মানিতে যেতে হবে? আমরা দেখতে চাই যে, আসল উদ্দেশ্য কি?’
‘আমরা কিছুদিন আগে দেখেছি- মালদ্বীপে বাংলাদেশের সাথে কোনো রকমের ব্যবসা-বাণিজ্যের কোনো ইন্টারেস্ট নাই সেখানে প্রধানমন্ত্রী দলবল নিয়ে ৬ দিন ছিলেন। অনেকে অনেক কথা বলেন, আমরা বলতে চাই না। সময় বলে দেবে কেন তিনি গিয়েছিলেন। এখনো বিছানার চাদরের রঙ সিলেকশনের জন্য পুলিশপ্রধান কেন জার্মানি যাবেন এটা ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে বলে দেবে?’
‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রসঙ্গে’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক সাগর-রুনি সেইদিন নিশ্চয় সরকারের এমন কিছু গুপ্ত সংবাদ জেনেছিল যার জন্য তাদের হত্যা করা হয়েছিল। দুঃখজনক হচ্ছে আজকে ১০ বছর চলে গেছে ওই হত্যাকান্ডের তদন্ত রিপোর্ট এখন পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না, বিচার তো পরের কথা।’
‘এই নিয়ে ৮৫ বার আদালত থেকে তদন্ত সংস্থা সময় চেয়েছে। কী পরিমান স্বৈরাচারী কী পরিমাণ নির্যাতনকারী সরকার হলে দুজন সাংবাদিকের হত্যা মামলার তদন্ত রিপোর্ট তারা ১০ বছরে প্রস্তুত করতে পারে না। এটা সঠিক যে, পারে না তা নয়। তারা করে না।’
‘করলে এমন কিছু সঠিক তথ্য প্রকাশিত হবে যে তথ্য এই সরকারের জন্য সুখকর নয়। কিন্তু আমি বলতে চাই, আপনারা তো ১০ বছর সাগর-রুনির হত্যা মামলার তদন্ত রিপোর্ট দিচ্ছেন না। কিন্তু আজকে যে তথ্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বেরিয়ে যাচ্ছে এটা কীভাবে ঠেকাবেন ?’
সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকিব, এনডিপির আবু তাহের, জাগপা’র খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, এনপিপি’র নবী চৌধুরী, ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।