নীরবে-নিভৃতে পালানো ছাড়া সরকারের অন্য পথ খোলা নেই - গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ২৪ জানুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:০০ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
নীরবে-নিভৃতে পালানো ছাড়া শেখ হাসিনার সরকারের অন্য কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ সোমবার দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি এই মন্তব্য করেন। নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়াতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৪৫ বছর বয়েসী আরাফাত রহমান কোকো। পরে ২৮ জানুয়ারি তার লাশ দেশে আনার পর বনানীতে দাফন করা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের ভয়ভীতি পাওয়ার কোনো কারণ নাই। চোর সব সময় ভীত থাকে। সুতরাং চোরকে চোর বললে কিন্তু রুখে দাঁড়ায় না, দৌড়ে পালায়। গোটা সংসদকে সবাই চোর বলে। সেই চোরদের সাহস থাকার কথা না, সেই চোরদের আমরা যদি উচ্চ স্বরে শুধু চোর চোর বলি তারপর সেই চোর কেটে পড়বে। অতত্রব আমরা শেখ হাসিনার পতন ঘটানোর সুযোগ নাও পেতে পারি। শেখ হাসিনা নিজে নিজে কেটে পড়তে পারেন। অর্থাৎ বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতি ও দেশীয় রাজনীতিতে তিনি যে অবস্থানে আছেন তাতে গুছিয়ে ওঠার সুযোগ আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। সেই কারণে নীরবে-নিভৃতে তার (শেখ হাসিনা) পালানো ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই।
তিনি বলেন, তিনি সাহস করে ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন না, তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেবেন না। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার উদ্যোগ তিনি নিতেন তাহলে হয়তবা ধীর-স্থিরভাবে বাংলাদেশে বসবাস করে মানুষের মাঝে হয়ত থাকার একটা প্রচেষ্টা নিতে পারতেন। কিন্তু সেটা নেবে না। আর সেটা নেবে না বলে তাকে দৃশ্যের আড়ালে থাকতে হবে, মানুষের চোখের আড়ালে থাকতে হবে। তাকে স্বেচ্ছায় বনবাসে যেতে হবে। এই বনবাসে কেউ তাকে পাঠাবে না। সেই কারণে আমাদের ভয়ের কোনো কারণ নাই। সূর্য ডোবার পালা। আর যারা অন্ধকারে আছেন তাদের জন্য সূর্য উদয়ের পালা। সেটার জন্য আমরা অপেক্ষা করি। ক্ষমতার পালাবদল হবেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে আমরা বিতাড়িত করবো –এটা তো আমাদের পণ। কেনো করবো? দেশের স্বার্থে। কেনো করবো? জনগণের স্বার্থে। আমার মনে হয়, যে গণতন্ত্র আমরা হারিয়েছি, সেই গণতন্ত্র আবার ফেরত পাবো তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এই সম্ভাবনাগুলো দেখেই সরকার আতঙ্কিত। যা কিছু করছে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত অথবা জনগণের তারা সমর্থিত নয় এই সরকার। ফ্যাসিবাদী অপকৌশলের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় টিকে যারা থাকে তারা এই কাজগুলো করবে এটাই স্বাভাবিক। এটাকে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে। গণতন্ত্রের স্বাভাবিক ব্যবস্থাটা আমাদেরকে ফেরত আনতে হবে। জনগণের পথে যারা হাঁটে বা গণতন্ত্রের যারা দায়িত্ব পালন করে তারা কখনো বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের মতো আচরণ করতে পারে না। সেজন্যই আমাদের কোনো ভয়ের কোনো কারণ নেই। এজন্য দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান রেখে গয়েশ্বর বলেন, আমাদের সরকার বিরোধী আন্দোলনে দৃশ্যমান হয়ে সাহসী ভূমিকা রাখার মধ্য দিয়ে আপোসহীন নেত্রীর আপোসহীন কর্মীকে যদি আমরা জনগণের মনে দাগ কাটতে পারি তাহলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সার্থক, জিয়াউর রহমান সার্থক। সেই সার্থকতাকে আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
দোয়ার আগে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হকের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুজ্জামান শিমুল, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজীব আহসান, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিনিযর সহ-সভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, ওলামা দলের আহবায়ক শাহ নেসারুল হক, সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদার, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী অংশ নেন।