সরকার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ‘পাঁয়তারা’ করছে : খন্দকার মোশাররফ হোসেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৪ পিএম, ২১ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১১ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সরকার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ‘পাঁয়তারা’ করছে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখে থাকবেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির একটা প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে যেখানে দুই চুলার গ্যাসের দাম ৯৭৫ টাকা ছিলো যা এখন প্রস্তাব করা হয়েছে ২১০০ টাকা, এক চুলার দাম ২০০০ টাকা করা হয়েছে। তার মানে তিনগুণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। বুঝেন..।”
‘‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা যাবে না, কোনো রকমের বৃদ্ধি মেনে নেয়া হবে না। আমরা এই আলোচনা সভা থেকে এর তীব্র বিরোধিতা করছি।”
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে তারা জ্বালানি তেল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করেছে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। জনগণের পকেট থেকে টাকা নিয়ে আজকে বড় বড় প্রজেক্ট করে, বড় বড় কমিশন নিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করছে। আর নয়।”
‘‘এই সরকার জনগণের সরকার নয়, তাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই। আর নয়, আর এসব অনাচার-অন্যায় থেকে রক্ষা পেতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। আসুন আমরা সকলে মিলে সেই লক্ষ্যে কাজ করি।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
‘জাতিসংঘের কাছে ১২টি মানবধিকার সংগঠনের চিঠি’ সম্পর্কে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ মনে করেছিলো যে, আমরা তো নিপীড়ন-নির্যাতন করে মুখ বন্ধ করে রেখে আমরা বোধহয় পার পেয়ে গেছি। পার পেয়েছে? আজকে সারা দুনিয়া জেনে গেছে বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই। সেজন্য ইউএস ট্রেজারি থেকে এই বাংলাদেশের একটি সংস্থার ওপরে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, কতগুলো হাই-অফিসিয়ালের ওপরে নিষেধাজ্ঞা এসেছে- এটা কিন্তু গৌরবের বিষয় নয়, জাতির হিসেবে আমাদের লজ্জার বিষয়।”
‘‘ আজকের পত্রিকায় দেখবেন, প্রায় ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা- তারা জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে দাবি জানিয়েছে যে, জাতিসংঘের যে পিস মিশনের বাংলাদেশ থেকে যারা যায় সেখানে যেন র্যাবের কোনো কর্মকর্তা, কোনো সদস্য যেতে না পারে। এটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার নয়, এটা অবশ্যই আমাদের জন্যে লজ্জার ব্যাপার। কারা আজকে বাংলাদেশকে এভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছে? আজকের এ সরকার। কেনো? গায়ের জন্য ক্ষমতায় থাকার জন্য।”
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ কোনো স্বৈরাচার নিজের ইচ্ছায় যায় না ধাক্কা দিতে হয়। পাকিস্তান সময়ে আমাদের এটার উদাহরণ আছে। এদেশের মানুষ পারে। আইয়ুব খানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে পেরেছে, মুক্তিযুদ্ধ করে পাকিস্তানিদের এদেশ থেকে বিদায় করতে পেরেছে।”
‘‘এই বাংলাদেশের মানুষ স্বৈরাচার এরশাদকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে উৎখাত করতে পেরেছে। অবশ্যই আমরা আশাবাদী এদেশের মানুষ ঠিক একইভাবে আজকের স্বৈরাচারকে উৎখাত করে এই দেশের গণতন্ত্র উদ্ধার করবে এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ-দর্শনকে বাংলাদেশে আবার আমরা বাস্তবায়ন করব।”
মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের আমিনুল হকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ নেতা বক্তব্য রাখেন।