জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা
লবিস্ট নিয়ে সরকারের অভিযোগ ভিত্তিহীন : ড. মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৩ পিএম, ১৯ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৪৭ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে সরকারের দেয়া অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে অভিহিত করেছে বিএনপি।
আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে তার ৮৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।
পুষ্পমাল্য অর্পণের পর ফাতেহা পাঠের পর শহীদ নেতার আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন নেতৃবৃন্দ। এরপরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, কৃষক দল, জাসাস, মৎসজীবী দল, ড্যাব, এ্যাবের নেতাকর্মীরা শহীদ নেতার মাজারে পুস্পার্ঘ্য অপর্ন করে শ্রদ্ধা জানান। এ সময়ে জনতার ঢল নামে জিয়াউর রহমানের মাজারে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে আওয়ামী লীগ সরকারই গত ১৪ বছর যাবত লবিস্ট নিয়োগ করেছে। আমরা বলতে চাই-এই যে অভিযোগ (বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ)- এটা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। যখন আমেরিকা থেকে দেশের একটি সংস্থা এবং এর উচ্চ পর্র্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সেনশন (নিষেধাজ্ঞা) এসেছে, যখন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সামিটে দাওয়াত পায় না। তখন কিন্তু আজকে এই কথাগুলো উঠছে। আমাদের প্রশ্ন আগে কেন এগুলো ওঠেনি। আমি কিছুদিন আগে পত্র-পত্রিকায় দেখেছি যে, আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের যে গণতন্ত্র হত্যা করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, চুরি-ডাকাতি করে এদেশের অর্থনীতি লুন্ঠন করছে- এগুলো যাতে ধামাচাপা দেয়া যায় সেজন্য তারা বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে গত ১৪ বছর যাবত। এটা যখন পত্র-পত্রিকায় বেরিয়েছে আজকে এই সরকার এই ধরনের একটি মিথ্যা-বানোয়াট কতগুলো ডকুমেন্ট দিয়ে তার শুধু জবাব দেয়ার জন্য বা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এ ধরনের কথা বলছে। এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট। দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগে ৩৭ লাখ ডলার খরচ করছে বলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, আমরা আজকে বিএনপি এবং দেশের জনগণের পক্ষ থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আমাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। তাঁর জন্মদিনে আমরা শপথ নিয়েছি-আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করব, এদেশের মানুষের যে মালিকানা তা তাদেরকে ফিরিয়ে দেবো। তার জন্য আমরা আগামী দিনে যে যেখানে আছি, দেশপ্রেমিক-গণতান্ত্রিক-জাতীয়তাবাদী শক্তি সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা এদেশে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যে পরিবেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে, যে পরিবেশে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, যে পরিবেশ আমাদের ভারপ্রাফত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ পাবেন। সেই লক্ষ্যে আমি দেশবাসীসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাবো।
নির্বাচন কমিশন গঠনের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনের খসড়া সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিষয়টা এককথায় যদি বলি, বাকশালকে পাকাপোক্ত করার জন্য এটা তারা করছে। আমরা এই ব্যাপারে একেবারেই ইন্টারেস্টেড না। এই কারণে যে, আমরা তো নির্বাচনেই যাবো না নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া। নিরপেক্ষ সরকার যদি না আসে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। শুধু তাই নয়, সেই নির্বাচনকে আমরা প্রতিহত করবো, হতেও দেবো না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ- সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসনে, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদরেজ জামান, সহ-সাধারণ সম্পাদক সর্দার নুরুজ্জামান, কৃষক দলের নাসির হায়দার, টিএস আইয়ুব, কামরুজ্জামান সেলিম, ওলামা দলের আহবায়ক শাহ নেসারুল হক, সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালকদার, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব, সদস্য সচিব আবদুর রহিম, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, যুগ্ম আহবায়ক লিয়াকত আলী, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারাদেশে দলের সকল কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। নয়াপল্টনের কার্যালয়ের নিচতলায় দুপুরে খোলা হয়েছে ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পা’। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই ক্যাম্প থেকে সর্বসাধারণের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা ও বিনা মূল্যে ওষুধ দেয়া হচ্ছে।
জিয়াউর রহমানের নামে আমাদের কমল নামে জাতীয়তাবাদী যুবদলের বই উন্মোচন : শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবনীর ওপর আমাদের কমল নামে বই প্রকাশ করেছে জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় যুবদল। জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু আমাদের কমল বই উন্মোচন করেন।
এ সময়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পদক নূরুল ইসলাম নয়নসহ যুবদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আমাদের কমল বইটি সম্পাদনা করেন কদমতলী থানা যুবদল নেতা মো. ওবায়দুর রহমান।
যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। যিনি জেড-ফোর্সের নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। তাঁর জন্মদিনে আমরা শপথ নিয়েছি-আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করব। তার জন্য আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। তাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, আমাদের ভারপ্রাফত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ পাবেন।
সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। জাতির এক ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান এক ঐতিহাসিক যুগান্তকারী দায়িত্ব পালন করেন। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য নেতৃত্বহীন জাতির দিশারী হয়ে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয় এবং তিনি যুদ্ধে অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় মহান নেতা। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে স্বনির্ভর দেশে পরিণত করেছিলেন। জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথেই আমরা স্বৈরাচারী অগণতান্ত্রিক শক্তির থাবা থেকে দেশকে মুক্ত করবো ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। আর এজন্য সকলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে ‘গণতন্ত্রের মা’ গৃহবন্দি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।