ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাহিয়ান ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন : অভিযোগ সহ-সভাপতির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩১ পিএম, ১৬ জানুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩৪ পিএম, ১১ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ অভিযোগ করে বলেছেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির ‘ডামি প্রার্থী’ ছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা। গত শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এসব অভিযোগ করেন রিয়াদ।
সূত্র জানায়, আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু আল নাহিয়ান ও লেখক শিগগির পদ ছাড়তে চান না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগে অসন্তোষ রয়েছে।
ফেসবুক লাইভে রিয়াদ জানান, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন আল নাহিয়ান। অভিযোগ আছে, তখন তার ফুফাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তার কক্ষে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আল নাহিয়ান। ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আপন চাচাতো ভাইকে নিজের ক্ষমতাবলে নৌকার বিরুদ্ধে জিতিয়েছেন আল নাহিয়ান।
রিয়াদ অভিযোগ করে বলেন, আল নাহিয়ানের বাবা ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাবুগঞ্জ-উজিরপুর আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তার বাবা ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বীমা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন। তিনি তৎকালীন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল, সেই নির্বাচনে বিএনপির ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা। ছাত্রলীগ সভাপতিকে এসব অভিযোগের জবাব দেয়ার আহ্বান জানান রিয়াদ।
তিনি জানান, অভিযোগ উঠতেই পারে। অভিযোগের জবাব তাকেই দিতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তাকে নিয়ে যেন কোনো ধোঁয়াশা তৈরি না হয়, নেতা-কর্মীরা যাতে বিভ্রান্ত ও আদর্শচ্যুত না হন, সেই জায়গা থেকে তার উচিত অভিযোগগুলো খন্ডন করা। লাইভের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন রিয়াদ।
তিনি বলেন, আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তারা অনিয়মতান্ত্রিক ও সংগঠনবিরোধী অনেক কর্মকান্ড করে সংগঠনকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। এসব বিষয় নিয়ে যারা কথা বলেন, যারা দুঃসময়ের আওয়ামী পরিবারের সন্তান, তারা তাদের চিহ্নিত করে সংগঠন থেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন। ফেসবুক লাইভে রিয়াদের করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফোনে ধরেননি। ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, গত কমিটির অবশিষ্ট মেয়াদে (১০ মাস) ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করবেন নতুন দুই নেতা। সেই সময়সীমা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। সাংগঠনিক ধারাবাহিকতার স্বার্থে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রায় সবাই দ্রুত কেন্দ্রীয় সম্মেলন চান।