সরকারের সব কৌশল ব্যর্থ হবে সফল হবে বিএনপি - গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ১৬ জানুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৫৮ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সরকারের সকল কৌশলই ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, এখন বিএনপির কৌশল সফল হবে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও করোনা আক্রান্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সুস্থতা কামনা করে আজ রবিবার অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় গয়েশ্বর এসব কথা বলেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দলের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের এগারো দফা বিধিনিষেধ মানুষের জীবন রক্ষা করতে জারি করা হয়নি। জার্মানভিত্তিক ডয়েচে ভেলের সার্ভেও ৮৮ শতাংশ মানুষ মতামত দিয়েছে রাজনৈতিক কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত করার একটি কৌশল মাত্র। জনগণ যদি মনে করে এটা সরকারের অপকৌশল, তাদের মতামত আমাদের পক্ষে আছে। এখন সরকারের এই বিধিনিষেধ মানতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা যে কর্মসূচি (জেলায় জেলায় সমাবেশ) দিয়েছিলাম, তা তো স্থগিত করা হয়নি; পুনঃনির্ধারণ করে আপনাদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আপনারা প্রস্তুতি রাখবেন। যখন পুনঃনির্ধারণ করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে তখন আরো অধিক শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা নেতানেত্রীদের দোয়া করতে এখানে একত্রে হাত তুলতে বসেছি। এটা যদি বাধা না হয়; রাজপথে বাধা হবে কেন? জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার ও রবিবার উভয় দিনই ছিল। এটা একটা টেস্ট কেইস, দেখি সরকার কোন পথে যায়। একটা সময় আছে যখন সকল কৌশলে সফল হওয়া যায় না। এখন সরকার যে কৌশলই করুক তারা ব্যর্থ হবে; কারণ এখন সরকারের ব্যর্থ হওয়ার সময়। আর বিএনপি তার কৌশলে সফল হবে। কারণ, এখন বিএনপির সফল হওয়ার সময়। যেখানে জেলা সমাবেশ বন্ধ করা যায়নি, ১৪৪ ধারা দিয়েও জনগণকে রুখতে পারা যায়নি। সুতরাং এ ধরনের বিধিনিষেধ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যায় না। সরকারের বিধিনিষেধ সরকারই মানে না বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, বাণিজ্য মেলাসহ সব কিছুই তারা করছে এবং করবে। সরকার এখন আক্রমণে নেই: তারা আত্মরক্ষায় আছে। সুতরাং ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আত্মরক্ষায় বড় জোর সমান সমান হওয়া যায়; জয়লাভ করা যায় না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এ নেতা বলেন, এখন আমরা অ্যাক্ট করব; ওরা (সরকার) রিয়াক্ট করবে। আমরা আক্রমণ করব, ওরা আত্মরক্ষা করবে। আপনারা প্রস্তুতি নেন। জনগণ সরকারের খেলাটা কিভাবে নেয়- তা দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। জনগণ সরকারের বিধিনিষেধকে খেলা বলছে। এখন তো আর ভয় নেই। জীবনভর কি সরকারের অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি করতে হবে? যে কর্মসূচিতে অনুমতি নিতে হয় না; সেই কর্মসূচি করা হবে। আল্লাহর রহমত আছে বলেই গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া বেঁচে আছেন বলে মনে করেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, এই সরকার যাবে। সরকার এখন কোমায়। সরকার যাবে বলেই এই ধরনের বিধিনিষেধ দিয়েছে। এই পুলিশ কেউ থাকবে না। অতীতে সরকার রক্ষার জন্য পুলিশ জীবন দেয়নি। বরং জনগণকে রক্ষায় পাশে এসে দাঁড়ায়েছে। যদি কোনো বিচারপতি অন্যায় করে তাদেরও বিচার করা যাবে, যেহেতু দেশে সংবিধান আছে। দেশে যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, সকল অন্যায়কারীরই বিচার হবে। কেউ রেহাই পাবে না।
বিএনপি ভোটাধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, জনগণকে বলব আমাকেই ভোট দিতে হবে-এমনটা নয়। আপনার ভোট, দিনের বেলা কেন্দ্রে গিয়ে আমার বিপক্ষে হলেও দেন। তারপরও নিজের ভোট নিজে দেন। এজন্যই আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন আপনারা আমার হাতকে শক্তিশালী করুন। নেতাকর্মীদের বলব, দেশের মানুষ আমাদের সাথে আছে, ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনে আপনারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিন। এই দোয়া মাহফিল কর্মসূচিতে অংশ নেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। এছাড়াও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপু, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা মহানগরের নবীউল্লাহ নবী, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।