উপজাতি তরুণী গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবি বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৪ পিএম, ৮ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:২২ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দেশের সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজলায় দুই উপজাতি তরুণী গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
গতকাল শুক্রবার (৭জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিবৃতিতে এ দাবি জানান বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
এর আগে হালুয়াঘাট উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের ডুমরিকুড়া গ্রামে গণধর্ষণের শিকার দুই উপজাতি তরুণী ও তাদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন বিএনপি নেতারা।
পরে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে হালুয়াঘাট সদরে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে মানববন্ধন করে বিএনপি।
এ সময় গণধর্ষণ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিএনপি নেতা প্রিন্স বলেন, সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতায় ইভটিজিং, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সামাজিক অবক্ষয় দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
অথচ এসব দমনে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। উল্টো সরকার ব্যস্ত বিরোধী দল দমন এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার হরনে। ফলে অপরাধীরা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।
মানববন্ধনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত পাশের গ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় একটি বখাটে চক্র সংঘবদ্ধ ভাবে গণধর্ষণ করে দুই উপজাতি তরুণীকে। কিন্তু ঘটনার ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বখাটে ধর্ষক চক্রের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারে।
তবে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান বলেছেন খুব দ্রুত আসামিরা গ্রেফতার হবে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ও তাদের পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তবুও আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। আশা করছি খুব দ্রুত ওই বখাটে চক্রের সদস্যরা গ্রেফতার হবে।
ওসি জানান, ঘটনার পর ধর্ষক চক্র সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়। কিন্তু ভয় উপেক্ষা করে নির্যাতনের শিকার দুই কিশোরী ঘটনাটি তাদের পরিবারকে জানালে তারাও হতবিহ্বল হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে চেপে যায়। পরে নির্যাতিত ওই কিশোরীরা বিষয়টি মানতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে ঘটনাটি চাউর হয়ে উঠে।
পরে বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় থানা-পুলিশ ঘটনার অনুসন্ধানে কিশোরীদের বাড়িতে যায়। পরে নির্যাতিতা এক কিশোরীর পিতা বাদি হয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর হালুয়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
ওই মামলায় স্থানীয় গাজিরভিটা ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন সদস্য কচুয়াকুড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে সোলায়মান হোসেন রিয়াদ (২২) কে প্রধান করে ১০ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কচুয়াকুড়া গ্রামের শরিফ (২০), এজাহার হোসেন (২০), কাটাবাড়ি গ্রামের রমজান আলী (২১), কাউছার (২১) আছাদুল (১৯), শরিফুল ইসলাম (২২), মিজান (২২), রুকন (২১) ও মামুন (২০)।
আসামিরা সবাই এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় গাজীরভিটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানান, গত এক বছর পূর্বেও এক গারো নারীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় সালিশ করে বিচার করে সতর্ক করা হয়েছিল ওই বখাটে চক্রটিকে। কিন্তু সতর্ক করেও এদের থামানো যায়নি। এই দলের নেতৃত্ব রয়েছে স্থানীয় রিয়াদ নামের এক যুবক।