নোয়াখালীতে বিএনপির দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২১ পিএম, ৫ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৫০ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আগামী ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় নোয়াখালী জেলার দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
আজ বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক দলীয় আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন-নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরণ এবং কোষাধ্যক্ষ ও শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের।
দলীয় প্যাডে ভিন্ন ভিন্নভাবে দেয়া চিঠির আদেশে উল্লেখ করা হয় দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দলীয় গঠনতন্ত্রের বিধান মোতাবেক এই দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আবদুর রহমান বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় দলের হাই কমান্ড এই দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা এ ব্যাপারে অবগত হয়েছি।
এই দুই নেতাকে অব্যাহতির বিষয়ে দলীয় গঠনতন্ত্রের কথা বলা হলেও মূলত: ১৬ জানুয়ারীর পৌরসভা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করায় দল থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপির দলীয় ও জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির। এই দুই নেতা পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
অব্যাহতির বিষয়ে জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও নোয়াখালী শহর বিএনপির সভাপতি, নারকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবু নাসের বলেন, আমরা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নেই। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন শুরুর আগে দলের মহাসচিব বলেছেন যে, যারা নির্বাচন করতে চায় তারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারবে। সে মোতাবেক আমি নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচেনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছি। আমি যখন মনোনয়নপত্র কিনি বা দাখিল করি তখন দল থেকে বলা হয়নি যে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।আমি মনে করি জনগণের সাথে সমৃক্ত থাকার একমাত্র মাধ্যম হলো নির্বাচন। দলের মহাসচিব যেহেতু বলেছিলেন স্বতন্ত্র নির্বাচন করা যাবে, তাই আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করছি। স্থায়ী কমিটি বা কেন্দ্রীয় কোন সিদ্ধান্তের আলোকে আমাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বা কোন অদৃশ্য হাতের ইশারায় এটি হয়েছে তা আমি জানিনা। ভোটের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন, ভোটের বাকী আর অল্প কয়দিন, এতদিন দল থেকে কোনো চিঠি দিয়ে আমাকে জানানো হয়নি যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। আজকের অব্যাহতির যে চিঠি ইস্যু হয়েছে তাতে আমি বিস্মিত। এক কথায় আমি দলের মহাসচিবের ঘোষণায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবো।
অপরদিকে, অব্যাহতির বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কম্পিউটার প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম কিরণ বলেন, দলের মহাসচিব ঠাকুরগাঁওয়ে সর্বশেষ যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, দলের পদ পদবি রেখে দলীয় প্রতীক ছাড়া নিজ দায়িত্বে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা যাবে। সে আলোকে আমি নির্বাচন করছি। দল থেকে যদি আগ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত থাকতো যে ভোট করলে দল থেকে অব্যাহতি বা বহিষ্কার করা হবে, তাহলে নির্বাচনের বিষয়ে ভাবতাম। কিন্তু এমন কোনো সিদ্ধান্ত আগ থেকে ছিলোনা। আমি জেলাতে বিভিন্ন সময় দলের বিভিন্ন সভায় নির্বাচনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। তখনতো আমাকে দল থেকে নিষেধ করা হয়নি। আমি রাজনৈতিক কর্মী। আর রাজনৈতিক কর্মীদের সামনে সুযোগ সব সময় আসেনা। নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে জনগণ আমাকে গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন কমিটমেন্ট করেছি। এখন সরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে দল থেকে আগ থেকে যদি নিষেধ করা হতো, তাহলে নির্বাচন করতাম না। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন পাড়ি দিয়ে আজকে এ অবস্থানে এসেছি।