যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২০ পিএম, ৫ মে,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:১৬ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সড়কে নেমে যেন ভুল করেছেন ঢাকার মানুষ! কারণ রোববার (৫ মে) সাতসকালেই প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে যানজটের কবলে। বিশেষ করে রাজধানীর বৃহত্তর ফার্মগেট -মিরপুর-কচুক্ষেত-ক্যান্টনমেন্ট এলাকা-কালশী, বনানীর দিকে যারা সকালে বের হয়েছেন কারও কারও এক জায়গায় ঘণ্টা কেটে গেছে। তবুও নড়েনি যানবাহনের চাকা।
অন্যদিকে রোজা-ঈদ-নববর্ষ ও তাপপ্রবাহের কারণে লম্বা সময় ছুটি শেষে প্রথমদিনের মতো পুরোদমে সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়েছে আজ। যে কারণে অন্যদিনের সড়কে বেড়েছে মানুষের চলাচল। যানবাহনও বেড়েছে। পুরান ঢাকা-বেইলি রোডসহ যেসব এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেসব জায়গায়ও সকাল থেকে যানজট দেখা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কেউ ট্রাফিক ব্যবস্থা, কেউ আবার কর্মদিবসে ভিআইপি মুভমেন্ট নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিশেষ করে সড়কের হালচাল নিয়ে তথ্য আদান-প্রদানে গড়ে ওঠা ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপগুলোতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
জানা গেছে, রোববার প্রধানমন্ত্রীর রাজধানীর মাটিকাটায় সেনাবাহিনীর সেনাপ্রাঙ্গন মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিংয়ের উদ্বোধন করেন। যার ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য সময়ের মতো এখানেও আগেভাগে সড়কে যানবাহন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। কোথাও কোথাও যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে বৃহত্তর মিরপুরের কিছু এলাকা, কচুক্ষেত, ইসিবি চত্বর, কালশী এলাকায় সকাল থেকে তীব্র যানজট।
ট্রাফিক এলার্ট গ্রুপে একজন কালশী এলাকার ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ভিআইপি মুভমেন্ট কেন গভীর রাত বা ভোর সকালে করে না? অফিস এন্ট্রি টাইমেই কেন এইসব?
একজন যানজটের চিত্র তুলে ধরে লিখেছেন, উত্তরা-মিরপুর এলাকা এড়িয়ে চলুন। পুরো রাস্তা জ্যাম।।অসহ্য গরম। আরেকজন ঘণ্টাখানেক ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট তুলে লিখেছেন, ঢাকার রাস্তা এখন আমাদের জন্য অভিশাপ !
এদিকে সকাল থেকে পুরান ঢাকা থেকে পল্টন পর্যন্ত সড়কের চিত্র অন্যদিনের চেয়ে ব্যতিক্রম দেখা গেছে। সকালের দিকে মাঝেমধ্যে গাড়ির চাপ কম দেখা গেলেও রোববার বেশ যানজট লক্ষ্য করা গেছে।
পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা মহানগর কলেজ, কবি নজরুল কলেজের পাশাপাশি সেন্টগ্রেগরি, সেন্টফ্রান্সিস জেভিয়ার্স স্কুলসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে আসা শিক্ষার্থী-অভিভাকদের ভিড় দেখা গেছে। অন্যদিনের চেয়ে যানবাহনও বেশি দেখা গেছে। ফলে অন্যদিনের চেয়ে বেশি যানজট দেখা গেছে এই এলাকায়।
ফলে ট্রাফিক বিভাগের লোকজন যারা সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন তারাও যেন অসহায় হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যেমন-খুশি তেমন করে চালাচ্ছেন চালকরা। এতেই বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন পথচারীরা।
সেন্টফ্রান্সিস স্কুল থেকে মেয়েকে ছুটি শেষে নেওয়ার সময় কথা হয় লাভলী আক্তারের সঙ্গে। ঢাকা মেইলকে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অটোরিকশার জন্য সবসময় টেনশনে থাকি। পায়ে চালিত রিকশা কমে গেছে। আগে অলিগলিতে চলত। এখন মূল রাস্তায় এসে আমাদের ঝুঁকিতে থাকতে হয়। এখন স্কুল চালু হওয়ায় রাস্তায় মানুষ বেড়েছে। যানজটও বাড়ছে।
লক্ষ্মীবাজারে ট্রাফিকের পুলিশের দায়িত্ব পালন করা মো. মাসুদ ঢাকা মেইলকে বলেন, স্কুল-কলেজ চালু হওয়ায় কিছুটা চাপ বেড়েছে। আমরা এরমধ্যেও যানজট যতটা কমানো যায়, লোকজনকে যতটা স্বস্তি দেয়া যায় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তাঁতীবাজার মোড়ে এসে লক্ষ্য করা গেছে তীব্র যানজট। এই এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি চলায় ছোট হয়ে আসছে রাস্তা। ফলে ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে যানবাহন।
তবে বংশাল থেকে ফুলবাড়িয়া পর্যন্ত কিছুটা ফাঁকা থাকলেও গুলিস্তান এসে সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি লক্ষ্য করা গেছে। জিরো পয়েন্ট থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত যানজট দেখা গেছে।