মানুষ অভ্যুত্থানের মতো জনসমাবেশে অংশ নিচ্ছে : মান্না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ৪ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০০ এএম, ২৬ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, মানুষ যেভাবে জনসমাবেশগুলোতে অংশ নিচ্ছে এগুলো তো অভ্যুত্থানের মতোই। সবকিছু বন্ধ, তারপরও মানুষ যাচ্ছে। খেয়াল করবেন, এরা সবাই বিএনপির সমর্থক নয়। এখানে সাধারণ মানুষ আছেন, যারা মনে করেন জিনিসের দাম কমা দরকার।
আজ শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
৫০তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে ‘সংস্কার কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে সম্ভব’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন’।
মান্না বলেন, ‘মানুষ এখনকার ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারে জর্জরিত। দ্রব্যমূল্যের ক্রস আঘাতে তারা যাকে পায় তাকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে। কারণ তাদের তো বাঁচতে হবে।’
সংবিধানে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, “সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে জেনে বুঝে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে। এই সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে ‘জার’-এর মতো ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বেশিরভাগ লোকই সংবিধানের ধারা সম্পর্কে জানে না। সংবিধানের ৭ ধারা থাকলে এই সরকারের বিরুদ্ধে কোথাও কিছু বলা যাবে না। ৭ ধারা থাকলে মানুষের অধিকার থাকবে না। সুতরাং মানুষকে সংবিধান সম্পর্কে সহজ করে বলতে হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে এই সংবিধান পরিবর্তন করা দরকার।’’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে সংবিধান বুঝিয়ে আন্দোলনে আনা কষ্ট। মানুষকে দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে- এটা বলে আনতে পারবেন। কিন্তু তাদের অধিকার আদায় হচ্ছে না। সংবিধান বদলানো দরকার তারা সেটা বুঝবে না। অনেকে জানেই না যে সংবিধান দেশ চালায়। তাই তাদের এভাবে আন্দোলনে আনতে পারবেন না।’
গণতন্ত্র মঞ্চ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে জানিয়ে মান্না বলেন, ‘গণতন্ত্র চর্চার যে বইগুলো আছে, সেগুলো নিশ্চয় পড়ে দেখেছেন। যেগুলো বলেছি তার ভিত্তিতে থাকতে চাই, লড়াইটা করতে চাই, লাগাতারভাবে এই কথাগুলো বলতে চাই। সেই কারণে বলবো, জনগণের ভাষায় কথা বলতে হবে। আমরা যারা এই জোটটি গঠন করেছি, এই জোট সম্পর্কে মানুষের মাঝে যেন সবচেয়ে ভালো আগ্রহ জন্মে যে মানুষ মনে করবে মুক্তি এরাই (গণতন্ত্র মঞ্চ) দিতে পারে, ওরা (অন্যান্য রাজনৈতিক দল) যতই বড় দল হোক, যতই বড় বড় কথা বলুক, ওদের দিয়ে হবে না। হলে এদের দিয়েই হবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা এই সংবিধানকে কাগজের টুকরা মনে করে। প্রয়োজন না হলে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। আবার দরকার হলে সংবিধানের আগে পবিত্র শব্দ জুড়ে দেয়। সংবিধান নির্বাহী বিভাগের ওপর নির্ভর করছে। নির্বাহী বিভাগ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গদি ধরে রাখার মাঝে আপনারা নিরাপত্তা খুঁজে পাবেন না। আপনারা নিরাপত্তা গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে খুঁজে পাবেন। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আজ এই গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তে একমত। জনগণ আর একজনের বদলে আরেকজনকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তারা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন দেখতে চায়।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ’৯০ পরবর্তী সময়ে পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর এতে তরুণ প্রজন্মকে দিয়ে অপরাজনীতি করাতে সক্ষম হয়েছে। এ জন্যই আমরা সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছি।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির কার্যকরী সভাপতি শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।