বিমানবন্দরে মালামাল লুট চক্রের ৪ সদস্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৮ পিএম, ২ অক্টোবর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৪৯ পিএম, ১১ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিদেশফেরত যাত্রীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নেয়া একটি চক্রের চার সদস্যকে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। গত শনিবার রাজধানীর বিমানবন্দর ও কদমতলী থানা এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন আমির হোসেন (৫১), লিটন মিয়া ওরফে মিল্টন (৪৮), আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে পারভেজ (৩৫) ও জাকির হোসেন (৪০)। তাদের মধ্যে আমির হোসেন এই চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
আজ রবিবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল-মঈন বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর কুয়েতপ্রবাসী এক ব্যক্তির সর্বস্ব লুটে নেয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা একটি চক্রের খোঁজ পান। পরে চক্রটির চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব বলছে, চক্রটি ১৫ বছর ধরে বিদেশফেরত যাত্রীদের মালামাল লুট করে আসছিল। আত্মীয়স্বজন বিমানবন্দরে নিতে আসেননি- এমন যাত্রীদের সাথে কৌশলে সখ্য গড়ে তুলতেন চক্রের হোতা আমির হোসেন। তিনি নিজেকে বিদেশফেরত যাত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে তার হাতে থাকত লাগেজ ও পাসপোর্ট। তার সাথে আত্মীয়স্বজন পরিচয়ে থাকতেন চক্রের অন্য সদস্যরা।
র্যাব জানায়, পরিচিত হওয়ার পর বিদেশফেরত যাত্রীর বাড়ি যে এলাকায়, আমির হোসেনও একই এলাকার বাসিন্দা বলে জানাতেন। একসাথে বাড়ি ফেরার প্রস্তাব দিতেন তিনি। রাজি হলে বিদেশফেরত যাত্রীকে সাথে নিয়ে গন্তব্যে রওনা দিতেন। পরে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে বিদেশফেরত যাত্রীদের সবকিছু লুটে নিতেন তারা। খন্দকার আল-মঈন জানান, আমির হোসেন বিমানবন্দর এলাকার একটি খাবারের দোকানে চাকরি করেন। পেশার আড়ালে তিনি বিমানবন্দরে অজ্ঞান পার্টির চক্র গড়ে তোলেন। চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্য এখন কারাগারে। আমির হোসেনও একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি আবার একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে ২০টির মতো মামলা রয়েছে। র্যাব বলছে, গ্রেফতার লিটন ছয় বছর ধরে এই চক্রের সাথে যুক্ত। তিনি গাড়ি চালানোর আড়ালে এই অপরাধ করে আসছিলেন। চক্রের আরেক সদস্য সিদ্দিক মূলত স্বর্ণব্যবসায়ী। এই চক্রের লুট করা সোনা তিনি কেনাবেচা করতেন। আর জাকির লুট করা জিনিসপত্র বেচতেন। র্যাব জানায়, আমির বিমানবন্দর এলাকার একটি ফাস্টফুডের দোকানে ১৫ বছর ধরে কর্মরত। তিনি তিন-চারদিন পরপর এরকম একজন করে ভিকটিমকে টার্গেট করেন। এ বছরই তিনি দুই বার গ্রেফতার হয়েছেন। গত জানুয়ারিতে সৌদি প্রবাসী এক ব্যক্তির কাছ থেকে একইভাবে সর্বস্ব লুটে নেয় আমিরের চক্র। এপ্রিলে আরেক প্রবাসীকে লুট করেন তারা।
কমান্ডার মঈন বলেন, বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডকেন্দ্রিক অজ্ঞান পার্টি চক্রের নেতৃত্ব এখন আমিরের হাতে। আমির হোসেন কখনো বিদেশে যাননি। কিন্তু তিনি বিমানবন্দর এলাকায় সবসময় একটি পাসপোর্ট হাতে ঘোরেন। তার সাথে লাগেজ থাকে। লাগেজের ওপর স্টিকার লাগানো থাকে যাতে মনে হয় তিনি বিদেশ থেকে ফিরলেন।তার সহযোগী লিটন মিয়া পেশায় মাইক্রোবাস চালক। এরা বিমানবন্দরে এলাকায় মাইক্রোবাসসহ অবস্থান করেন। যারা উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতে ইচ্ছুক তাদের মাইক্রাবাসে ওঠান। পথে চেতনানাশক প্রয়োগ করে সব লুটে নেন। লিটনও একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন।