ঢাকা শহরে পানিতে ভর্তুকি দেয়া হবে না : এলজিআরডি মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৪ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
রাজধানী ঢাকায় ওয়াসার পানিতে ভর্তুকি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তবে জোনভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করে বস্তিতে বসবাসরত নিম্ন আয়ের মানুষকে কম দামে পানি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
আজ শুক্রবার প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) মিলনায়তনে সিটি রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘নগর সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
ঢাকা শহরে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষই বিত্তবান উল্লেখ করে গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে সেই টাকা দিয়ে ধনীদের ভর্তুকি দেয়া নৈতিকভাবে কতটা সমর্থনযোগ্য- প্রশ্ন তোলেন এলজিআরডি মন্ত্রী।
তিনি বলেন, গুলশান-বনানীতে বসবাসকারীরা যে হারে পানির বিল দেন বস্তিতে থাকা অথবা যাত্রাবাড়ীতে থাকা মানুষ কেন সমান পানির মূল্য পরিশোধ করবে?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ঢাকায় জোনভিত্তিক পানির দাম আলাদা করে বাড়ানো হবে। গুলশান-বনানীর অভিজাত এলাকায় পানির দাম বেশি থাকবে। নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাসরত এলাকায় পানির দাম অপেক্ষাকৃত কম থাকবে। তবে ঢাকা শহরে পানিতে ভর্তুকি দেয়া হবে না।
শুধু পানি নয় হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের মূল্য জোনভিত্তিক নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এলজিআরডি মন্ত্রী জানান, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় মানুষ ভালো আছে। এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ায় খাদ্য-পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে যে কারণে মানুষ অসুবিধাই আছে। সরকার এটা অস্বীকার করছে না। বরং মানুষকে ভালো রাখার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তার সবই করছে।
মো. তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশ বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে। এটা না বলে সরকারের ব্যর্থতার কারণে শুধু যদি বাংলাদেশের মানুষ খারাপ আছে এটা বলা কতটা যৌক্তিক? এটা বলে কি মানুষের ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে না?
মন্ত্রী আরও বলেন, অনেক পরিশ্রমের ফলে ড্যাপ গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এখন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ঢাকাকে বাসযোগ্য, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ অনেক দেশের তুলনায় সরকার সফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে এই সফলতা অর্জিত হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার মূল শক্তি হলো জনগণ। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক দলের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারও তাদের আছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা, জ্বালাও পোড়াও করবেন, আইনশৃঙ্খলার বিঘœ ঘটাবেন রাষ্ট্র তো এটা করতে দেবে না। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইন শৃংখলা বাহিনীর দায়িত্ব। তারা সে দায়িত্ব পালন করবেই।
সিটি রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আদিলুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের মহাসচিব দীপ আজাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু প্রমুখ।