প্রকল্পে সময় বৃদ্ধি মানেই ব্যয় বৃদ্ধি : সিপিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৭ পিএম, ২৯ জুন,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২০ এএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে দেখা যায় বারবার প্রকল্প সংশোধন হয়। এর ফলে সময় বাড়ানো হয়। উন্নয়ন প্রকল্পে সময় বাড়ানো মানেই ব্যয় বেড়ে যাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান।
আজ বুধবার নগরীর গুলশান হোটেল লেকশোরে ‘ইমপ্লিমেন্টেশন অব পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ ইন শিওরিং গুড ভ্যালু ফর মানি’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩১টি প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো সংশোধনের ফলে টাকার পরিমাণ বেড়েছে ২৯ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা, পদ্মা সেতুতে যে টাকা লেগেছে প্রায় তার সমান। পদ্মা সেতুর মোট ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। বারবার সংশোধন ও সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার ফলেই এ টাকা বেড়েছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে দেখি বারবার প্রকল্প সংশোধন হয়। এর ফলে সময় বাড়ানো হয়। সময় বৃদ্ধি মানেই ব্যয় বৃদ্ধি। আমরা মেগা প্রকল্প ও ছোট খাটো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। ২০২২-২৩ সালের যে বাজেট উপস্থাপিত হয়েছে, সেখানে দেখেছি ১ হাজার ৩৫৬টি প্রকল্প বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স বাদ দিলে ১ হাজার ২৫০টি প্রকল্প থাকে। এগুলো বিভিন্ন সামাজিক অবকাঠামো, সড়ক, সেতুসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ। এসবে লাখ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন হবে। যদি সুশাসনের সঙ্গে সময়মতো বাস্তবায়ন করা যায়, সাশ্রয়ীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে দেশের জন্য মঙ্গল। এমনটা হলে আমরা আরও বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব।
তিনি বলেন, আমাদের যে অর্থ সাশ্রয় হবে, তা দিয়ে অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব। আমরা যে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারি, তা ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন। পদ্মা সেতু আমাদের অর্জনের বড় প্রতীক। এটি প্রত্যাশিত টাইমলাইনে হয়েছে। পদ্মা সেতু থেকে ইতিবাচক আর্থ-সামাজিক ফলাফল আমরা পাব। পদ্মা সেতু প্রলম্বিত ইতিবাচক একটা ছায়া রেখে যাবে। এর অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আমরা দেখছি মেগা প্রকল্প সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে খবরদারি করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, ফলে আমরা একটা ইতিবাচক সুফল পাচ্ছি। বিষয়টি অন্যান্য প্রকল্পেও যদি কাজে লাগাতে পারি, তাহলে ১ হাজার ২৫০টি অবকাঠামো ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক প্রকল্প ২০২২-২৩ সালে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব। প্রকল্প নিয়ে একটা কাঠামো করা যায় কি-না, তাহলে ভালোভাবে কাজ করতে পারব। আমাদের অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে।
মুস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ভালোভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে প্রাইভেট খাত আরও আকর্ষণীয় হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি সড়ক যখন হয়, একটি সেতু যখন হয়, তাকে ঘিরে যা বিনিয়োগ হয় তা অবর্ণনীয়। এখান থেকে সরকার কর ও রাজস্ব আদায় করে। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটির অন এস্টিমেটেসের চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ, সংসদ সদস্য ইঞ্জি. এনামুল হক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান প্রমুখ। সিপিডি ও দ্য এশিয়ান ফাউন্ডেশন এ সংলাপের আয়োজন করে।