রমজানে সাশ্রয়ী দামে ৬ নিত্যপণ্য পাবে এক কোটি পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২১ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৪৩ এএম, ১১ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
রমজান সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে এক কোটি হতদরিদ্র পরিবারকে এবার টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে পেঁয়াজ, তেল, ডাল, চিনি, খেজুর ও ছোলা- এই ছয়টি পণ্য দেয়া হবে।
আজ রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের কষ্ট হলেও, দাম না বাড়ালে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করে দিলে সংকট আরও বেশি হতো। কৃষকদের স্বার্থেই পেঁয়াজের দাম বেশি বলেও মনে করেন মন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এটা তো সত্যি কথা যে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। আমরা যেটা চেষ্টা করছি, সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে সেটা সাধারণ মানুষকে দেওয়া। আমরা চিন্তা করলাম রমজান মাস উপলক্ষে ৫০ লাখ মানুষকে দেয়া যায় কিনা। সেটা ট্রাকের মাধ্যমে নয়, আগে যেভাবে আড়াই হাজার টাকা দিয়েছিল, দুস্থ লোক যারা তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ৫০ লাখ নয়, এক কোটি মানুষকে সেই ব্যবস্থায় আনতে। আমরা সরকারিভাবে চেষ্টা করছি রমজানকে সামনে রেখে এক কোটি মানুষকে আমরা এ ধরনের সামগ্রী দেবো সাশ্রয়ী মূল্যে। আগে যেভাবে টাকাটা দেওয়া হয়েছে, সেই লিস্ট তো আছে। প্রতিটি ইউনিয়নে টিসিবির মাধ্যমে ওপেনিং করা হবে সেখান থেকে তারা কালেক্ট করে নেবে। যে চারটা পণ্য আমরা দেই সেটার সঙ্গে রমজান মাসে খেজুর ও ছোলা যোগ হবে।
সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তেলের দাম আমরা বাড়িয়েছি কারণ ৯০ ভাগ তেল আমরা ইমপোর্ট করি খাওয়ারটা। আন্তর্জাতিক বাজারে সেই তেলের দাম বেড়েছে। কন্টেইনার ভাড়া বেড়েছে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি আমরা ঠিক না করে দিই তাহলে তো ব্যবসায়ীরা তেল আনবেই না।
তিনি বলেন, ‘এ জন্য ট্যারিফ কমিশন আছে তারা বসে আন্তর্জাতিক বাজারের ১০ দিন ১৫ দিনের প্রাইজ ফিক্সআপ করে। সব দেখে একটি প্রাইজ ফিক্স করা হয়, যেটা হওয়া উচিত। তেলের দাম আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ১০ বছর আগে যেটা ছিল সেটা এখন ডাবল হয়েছে। এখন যদি আমরা বলি দাম বাড়াতে পারবে না, তাহলে তারা (ব্যবসায়ীরা) ইমপোর্ট করবে না। ইমপোর্ট না করলে তো আরও বড় ধরনের ক্রাইসিস হয়ে যাবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম না কমলে ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে লাভ নেই মন্তব্য করে টিপু মুনশি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে তো লাভ হবে না। এক বিষয় হতে পারে যে আমরা যে দাম নির্ধারণ করে দিলাম তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে ভোক্তা অধিকারসহ সরকারের বিভিন্ন হ্যান্ডস দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এর উল্টোটা যদি বলি, পেঁয়াজের দাম ২৫ টাকা হয়ে গেলো কেন? সেখানেও কিন্তু কৃষকরা বলছে, পেঁয়াজ কিন্তু আমরা রাস্তায় ফেলে দেবো। এটা কাঁচামাল তো দুদিন যদি ট্রান্সপোর্ট বন্ধ থাকে এটার দাম কিন্তু বেড়ে যাবে। কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের একটি হিসাব দিয়েছে জায়গা ভেদে ১৮ থেকে ২০ টাকা খরচপ্রতি কেজিতে কৃষকদের। এটাকে অন্তত ২৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২৫ টাকা যদি কুষ্টিয়া-রাজবাড়ীতে কৃষকরা বিক্রি করে ঢাকায় এটা ৪০ টাকা ৪৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। এখন ঢাকায় যখন ২৫ টাকা হয়েছিল কৃষিমন্ত্রী আমাকে বললেন, আমরা সব ইমপোর্ট বন্ধ করে দেবো, কৃষকরা তো কান্নাকাটি করছে। এটা হচ্ছে সমস্যা। যদি দাম কমে যায় কৃষকরা বলেন, কী করবো? আবার যখন বেড়ে যায় ভোক্তারা বলেন, দাম বেড়ে গেছে।