লবিস্ট নিয়োগ করে সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না - শওকত মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১১ পিএম, ১৫ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৩৮ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
সদ্য গ্রেফতার হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামকে মুক্তি না দিলে আগামী সাপ্তাহেই আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
আজ শনিবার দুপুরে এক মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী সমর্থিত পেশাজীবী সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শওকত মাহমুদ এই হুঁশিয়ারি দেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে সদ্য গ্রেফতার হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। গত বৃহস্পতিবার একটি গায়েবি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি রসায়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য।
তিনি বলেন, আজকে জেলখানাগুলোতে পেশাজীবীরা আটকে আছেন, তারা তাদের মত প্রকাশ করতে পারছেন না, মানবাধিকার তারা চর্চা করতে পারছেন না। মিথ্যা মামলায় তাদেরকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাজমেরী এস এ ইসলামকে গ্রেফাতার করা হয়েছে ভয় ধরানোর জন্য। আমরা বলে দিতে চাই, পেশাজীবীরা কোনোভাবেই পিছু হটবো না। আমরা এক সাপ্তাহের মধ্যে দেখতে চাই, তাজমেরী এস এ ইসলামকে মুক্তি দেয়া হয়েছে কিনা। যদি তাকে মুক্তি দেয়া না হয় তাহলে রাজপথে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়ে যাবে এবং এই আন্দোলন স্বৈরাচার বিরোধী সরকার পতনের আন্দোলনে রূপান্তরিত হবে।
পেশাজীবীদের উদ্দেশ্যে শওকত মাহমুদ বলেন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আন্দোলনে কোনো আপোস নাই। এজন্য সরকার মাঝে-মধ্যে চেষ্টা করে পেশাজীবী পরিষদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য। আমি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, যেসব পেশাজীবী মনে করেন সরকার পড়ে যাবে তারপরে তারা ঘর থেকে বের হবেন। তাদের বলব, যদি রাজপথের আন্দোলনে আপনারা না আসেন তাহলে আপনারা রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত হবেন। বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ।
তিনি বলেন, বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে লাভ হবে না, তদবির করে ক্ষমতা টেকানো যাবে না। কারণ বিশ্ব বিবেক জেগে উঠেছে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো একের পর এক রিপোর্ট প্রকাশ করছে। সরকার যতই লবিস্ট নিয়োগ করুক সত্যকে আর ধামাচাপা দেয়া যাবে না।
শওকত মাহমুদ বলেন, ১৯৭১ সালে যখন চূড়ান্ত বিজয় সমাগত, যখন জনগণ বিজয়ের জন্য অপেক্ষা করছে তখন তারা বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষকদের হত্যা করেছে। কিন্তু তারপরও তারা বিজয় অর্জন করতে পারেনি। তাদের পতন হয়েছে। নব্বইয়ে এরশাদের পতনের প্রাক্কালেও স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পেশাজীবী নেতা ড্যাবের যুগ্ম মহাসচিব ডা. মিলনকে হত্যা করেও তার পতন ঠেকাতে পারেনি। সেদিন থেকে স্বৈরাচার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সাংবাদিকরা সেদিন থেকে পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছিল এবং এরশাদের পতন পর্যন্ত তারা পত্রিকা বের করেনি। আজকে এই স্বৈরাচার সরকার তাদের পতনের প্রাক্কালে আবার সেই শিক্ষকের ওপর আক্রমণ শুরু করেছে, তাজমেরি ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে ভয় ধরানোর জন্য। আমরা কোনো অবস্থাতেই পিছু হটব না। আমরা এ সরকারের পতন ঘটাবো এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তাজমেরি এস এ ইসলাম, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীসহ সব রাজবন্দিকে মুক্ত করে আনবো ইনশাআল্লাহ। সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএফইউজের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাবির অধ্যাপক আক্তার হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. আবদুল কুদ্দুসসহ পেশাজীবী নেতারা।