অসুস্থতার জেরে শো বাতিল, কী হয়েছে নচিকেতার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ৪ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:৪৩ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
শারীরিক অসুস্থতার জন্য শেষ মুহূর্তে শো বাতিল করতে বাধ্য হলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। গায়ক নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের রামপুরহাটে একটি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার কথা ছিল নচিকেতার। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সড়কপথে সাড়ে তিন শ কিলোমিটারের দীর্ঘ ভ্রমণ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না বলে ভিডিও বার্তায় জানান তিনি। নচিকেতা আরও জানান, চিকিৎসকও আপাতত বিশ্রামে থাকতে বলেছেন তাঁকে। তবে কী অসুখে ভুগছেন, ৪০ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় সেটা জানাননি গায়ক।
পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানে না যেতে পারায় ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নচিকেতা বলেন, ‘আমি চাই, আপনাদের অনুষ্ঠান সফল হোক। আমি কথা দিচ্ছি, পরের বার আপনাদের ওখানে গিয়ে মনোরঞ্জন করব। আমি জানি, শেষ মুহূর্তে সমস্যায় ফেললাম আপনাদের। কিন্তু আমি পরে কম্পেনসেট করে দেব।’ নিজের সমস্যা প্রসঙ্গে আয়োজকদের জানালেই শিল্পীর শো বাতিল করেছেন আয়োজকেরা। এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা আরও জানিয়ে দেন নচিকেতার পরিবর্তে এই অনুষ্ঠান করবেন বাবুল সুপ্রিয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, হাসিমুখেই সবার কাছে ভালো থাকার প্রার্থনা করেছেন তিনি। তবে টি–শার্ট গায়ে চশমা চোখে নচিকেতাকে দেখে অসুস্থতার ছাপ স্পষ্ট। সংগত কারণে তাঁর ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে ভক্তদের মন্তব্য দেখে বোঝা যাচ্ছে তাঁর অনুরাগীরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। সবাই তাঁর সুস্থতায় আরোগ্য কামনা করেছেন। বেশির ভাগের বক্তব্য, ‘তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন নচিকেতা। আপনি উজ্জ্বল নক্ষত্র, আপনার সুস্থ থাকা দরকার।’
জীবনমুখী গান গেয়ে নব্বই দশকে দুই বাংলায় বেশ জনপ্রিয়তা পান নচিকেতা। গত ২৭ জানুয়ারি নচিকেতা চক্রবর্তী সর্বশেষ গান ‘হ্যাপি ডিভোর্স’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ গানের খবর দেন নাটকীয়ভাবে। একটি ছবি পোস্ট করেন নচিকেতা। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘যা অবশেষে ডিভোর্সটা হয়েই গেল’।
নচিকেতার এই পোস্ট থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা। অনেকে ধরে নিয়েছেন ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কে ইতি টানলেন সংগীতশিল্পী। পোস্টের মন্তব্য ঘরে নানা জল্পনা। কেউ তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, কেউ আবার সহানুভূতি। কেউ লিখছেন ডিভোর্স নেবেন না দাদা।
নচিকেতার জন্ম ১৯৬৪ সালে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায়। পড়াশোনা করেছেন উত্তর কলকাতার মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে। ছোটবেলা থেকেই গান লিখতেন তিনি। নিজেই সুর করতেন।
১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘এই বেশ ভালো আছি’। এরপর একে একে কে যায় (১৯৯৪); কি হবে (১৯৯৪); চলে যাব তাকে নিয়ে (১৯৯৬); কুয়াশা যখন (১৯৯৭); আমি পারি (১৯৯৮); দলছুট (১৯৯৯); দায়ভার (২০০০); একলা চলতে হয় (২০০২); এই আগুনে হাত রাখো (২০০৪); আমার কথা আমার গান (২০০৫); তীর্যক (২০০৭); এবার নীলাঞ্জনা (২০০৮); হাওয়া বাদল (২০১০); সব কথা বলতে নেই (২০১২); দৃষ্টিকোণ (২০১৪) আয় ডেকে যায় (২০১৫)সহ আরও অনেক একক অ্যালবাম রিলিজ করেন।
এ ছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি যৌথ অ্যালবাম নিয়েও কাজ করেছেন। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে আরও রয়েছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘একদিন ঝড় থেকে যাবে’, ‘অনির্বাণ’, ‘কুয়াশা যখন’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’, ‘ডাক্তার’ ইত্যাদি। ১৯৯৮ সালে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমার মধ্যে দিয়ে প্রথম সংগীত পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করেন নচিকেতা।